ঢাকা, শুক্রবার ৩ মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় চারটি আসনের বিপরীতে নৌকা পেতে লড়ছেন ৩৭ জন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:৪৩:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দামাদল শুরু হয়েগেছে।  বিএনপি সহ কয়েকটি দল নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত ও নির্বাচন বানচাল করতে হরতাল-অবরোধ সহ নানা কর্মসূচি পারন করছে অপরদিকে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি  সহ সমমনা দল গুলো ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়ন বিক্রি মঙ্গলবার শেষ করবে। ১০ টি বুথে ৮ টি বিভাগের মনোনয়ন বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। অনলাইন ও বুথ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন সংগ্রহ করছে। কুষ্টিয়ার চারটি সংসদীয় আসনে নৌকা পেতে সোমবার পর্যন্ত ৩৭ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও ভিআইপি কুষ্টিয়া সদর ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কুষ্টিয়া-৩ আসন। এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ২০১৪ ও ১০১৮ সালে নির্বাচিত হওন। এবারও তিনি এই আসনের শক্তিশালী প্রার্থী। তিনি দুই বার নির্বাচিত হয়ে তার আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। মিষ্টভাষি ও ক্লিন ইমেজের মানুষটি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার অত্যান্ত আস্থাভাজন। গত কয়েকবার মনোনয়ন না কিনলেও এবার সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিষ্টার এম.আমীর-উল ইসলাম মনোনয়ন নিতে আগ্রহি। এছাড়াও যুদ্ধহত বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ
সম্পাদক আজগর আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ এ. এফ.এম আমিনুল হক রতন, সহ-
সভাপতি লাইলা আরজুমান বানু ও প্রবাসী খন্দকার
মাহাতাবুল হক জয় মনোনয়ন প্রত্যাশি।

বৃহত্তর দৌলতপুর উপজেলা নিয়ে কুষ্টিয়া -১ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক গ্রুপ থাকায় এখানে মনোনয়ন দৌড়ে সবথেকে বেশী প্রার্থী। বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ মনোনয়ন পেতে এগিয়ে থাকলেও  এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন তুলেছেন দৌলতপুর উপজেলার ডাংমড়কা গ্রামের প্রয়াত সাংবাদিক নাহারুল ইসলামের বড় ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের গবেষণা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দৌলতপুর উপজেলার মাহমুদুল হাসান রাকিব, উপজেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সাবেক স্পেশাল পিপি এ্যাড. শরীফ উদ্দিন রিমন, দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্বতন্ত্র সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদ পুত্র, দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন,  দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আরিফ আহমেদ, দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. হাসানুল আসকার হাসু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মাসুদ করীম মিঠু, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী খান এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারিক আল মামুন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটর সদস্য খলিসাকুন্ডি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হক। এছাড়াও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদের বড় ছেলে দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নুরুজ্জামান বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হুদা পটল আওয়মী লীগ দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন।

জেলার আলোচিত-সমালোচিত আসন ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-২ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী জোটের অন্যতম শরীক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু গত তিন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। এই দীর্ঘসময় আওয়ামী লীগের সাথে জাসদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে একাধিক হত্যা, লুটপাট হয়। এবারও ইনু নৌকা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদন্ডিতা করতে চান। ইনুকে হারাতে ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এক হলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রধানের নির্দেশে ইনুর পক্ষে ভোট করেন। এবার ইনুকে আর ছাড় দিবে না বলে ঘোষনা দেয় মিরপুর ভেড়ামারার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এবার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চান মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক ও মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন।  কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ২ জন সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ ও এস,এম, মোস্তানজিদ লোটাস, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার সংরক্ষিত মহিলা এমপি সৈয়দা রাশিদা বেগমের ছোট পুত্র সৈয়দ কামরুল আরেফিন। ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শরিফুজ্জামান নবাব, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ রাশেদুজ্জামান ছন্দ।

কুষ্টিয়া-৪ কুমারখালী-খোকসা উপজেলা নিয়ে এই আসন। এখানেও আছে আওয়ামী লীগের প্রকাশে গ্রুপিং। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকাশ্যে তাদের স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে জানান দিয়েছে তাদের গ্রুপিং। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাই নিজ নিজ গ্রুপ তাদের মনোনয়ন নিতে মরিয়া। এই আসন থেকে বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার এম,আমিরুল ইসলাম এর মেয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান খান, এছাড়াও মনোনয়নপত্র সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক জেলা প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জাহিদ হোসেন জাফর, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান। এই তালিকায় আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, সাবেক এমপি বেগম সুলতানা তরুণ ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অভি চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ কুষ্টিয়া জেলার সাধারন সম্পাদক  এ্যাডঃ সুনীল কুমার চক্রবর্তী।