ঢাকা, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

খরার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, আশাবাদী বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৮ মে ২০২২ ১২:০৬:০০ অপরাহ্ন | আন্তর্জাতিক

 

বাংলাদেশের জন্য অন্যতম প্রধান আমদানি বাজার ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। লাতিন আমেরিকার দেশ দুটি থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে তেল, গম, চিনি, মাংসসহ নানা ধরনের ফল ও মসলা আমদানি করে বাংলাদেশ। কিন্তু ওই অঞ্চলে গত কয়েক মাস তীব্র খরার কারণে এ বছর কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। যার ফলে অনিশ্চয়তায় পড়ে সয়াবিনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের আমদানি। সেই সঙ্গে হু হু করে বাড়তে থাকে দাম। তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে অবশেষ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। তাতে আশার আলো দেখছেন বাংলাদেশের ভোক্তারা।

ব্রাজিলে এ বছর খরা সত্ত্বেও রেকর্ড পরিমাণ ফসল ফলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ইনস্টিটিউট অব জিওগ্রাফি অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস (আইবিজিই)। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে সরকারি সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২২ সালে দেশটিতে ফসল উৎপাদন ২৬ কোটি ১৫ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় অন্তত ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

এর আগে গত মার্চ মাসে ব্রাজিলে ফসল উৎপাদনের যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, নতুন পূর্বাভাসে তার চেয়ে এক শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২৫ লাখ টন বেশি ফসল ঘরে তোলার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আইবিজিই’র গবেষণা ব্যবস্থাপক কার্লোস বারাদাস বলেন, দেশের মধ্য ও দক্ষিণ অংশের গ্রীষ্মকালীন ফসল আবহাওয়াজনিত সমস্যায় পড়েছিল, যার ফলে কম উৎপাদনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে বৃষ্টিপাত ফেরার সঙ্গে সঙ্গে কিছু ফসল পুনরুদ্ধার হয়েছে।

এবারের মৌসুমে ব্রাজিলের প্রধান কৃষিপণ্য সয়াবিন ঘরে তোলা প্রায় শেষের পথে। সেখানে গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে সয়াবিনের উৎপাদন বেড়েছে অন্তত দুই শতাংশ। তা সত্ত্বেও এ বছর ব্রাজিলে বহুল ব্যবহৃত এ তেলবীজের মোট উৎপাদন ১১ কোটি ৮৫ লাখ টন দাঁড়াতে পারে, যা ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কম।

এ বিষয়ে বারাদাস বলেন, আগেও বলেছি, ফসলে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ফসল ফলানোর সময়ই ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছিল। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চল। সেখানে গত বছরের তুলনায় সয়াবিন উৎপাদন মোটামুটি ৪৬ শতাংশ কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুধু সয়াবিনই নয়, ব্রাজিলে মার্চ মাসের তুলনায় এপিলে উৎপাদন বেড়েছে আলু (২ দশমিক ৪ শতাংশ), টমেটো (১ দশমিক ৫ শতাংশ), মটরশুটি (১ দশমিক ৩ শতাংশ), আঙুর (১ দশমিক ২ শতাংশ), ক্যানেফোরা কফি (এক শতাংশ) প্রভৃতিরও।

আইবিজিই’র গবেষণা ব্যবস্থাপক নিশ্চিত করেছেন, এবারের মৌসুমে দেশটিতে ভুট্টারও চমৎকার ফলন হয়েছে, যা গ্রীষ্মকালীন ক্ষতি অনেকটাই পূরণ করে দেবে।

ব্রাজিলের মতো খরা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে প্রতিবেশী আর্জেন্টিনাও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে গত কয়েক মাস বিরূপ আবহাওয়া সত্ত্বেও সয়াবিন, সূর্যমুখী, ভুট্টার মতো তেল-জাতীয় ফসলের ফলন অনেকটাই ‘সন্তোষজনক’।