ঢাকা, শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জরুরী খাদ্যপণ্য আমদানিতে শিল্পগ্রুপগুলো আগ্রহী নয়

গোলাম রাব্বানী | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২১ অক্টোবর ২০২১ ১২:২৯:০০ অপরাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

সংকটকালীন সময়ে দেশের বড় বড় শিল্পগ্রুপ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য আমদানি করত। কিন্তু এবার আমদানিতে কোন শিল্পগ্রুপ আগ্রহ প্রকাশ করছে না। গত বছরে আমদানি করা পেঁয়াজের সঠিক দাম পায়নি বলে এবার আগ্রহী নয় ব্যবসায়ীরা বলে জানায়। এদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জন্য জরুরী বৈঠক ডেকেছে ব্যবসায়ীরা।

আমদানি করা পণ্য পচে গিয়েছিল

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানির জন্য ৩৫১টি অনুমতিপত্রের (এলসি) বিপরীতে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৫১ টন পেঁয়াজ আমদানি করেন। ৮টি দেশ থেকে এ পেঁয়াজ আমদানি করেছে ১৫৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দেশের বড় ৪টি শিল্পগ্রুপ মেঘনা, বিএসএম, এস আলম ও সিটি গ্রুপ ২৩ হাজার ২৮৮ টন বা ৩৭ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করেছে। দেশে এসব পেঁয়াজ আসার পর পণ্যটির দাম পড়ে যায়। তখন অধিকাংশ ব্যবসায়ী পণ্যটি আর বন্দর থেকে খালাস নেননি। শেষ পর্যন্ত পচে যাওয়া অনেক পেঁয়াজ নিলামে তুলতে হয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে। যার ফলে এবার আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো। এবার কোনো গ্রুপই সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খুলেনি। শুধু তুরস্ক থেকে ৩ হাজার ১৮৭ টন পেঁয়াজ আমদানি করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিসিবি।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, গত বছর দেশের প্রয়োজনে পেঁয়াজ আমদানি করেছিলাম প্রায় ১৫ হাজার টন। বন্দর থেকে খালাস নেওয়ার সময় বেশিরভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এতে আমরা বড় ধরনের লোকসানে পড়ি। তাই এবার আর পেঁয়াজ আমদানি করছি না।

শুল্ক কমানোয় সুফল মেলেনি

বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) কমানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানিতে বিদ্যমান পাঁচ শতাংশ শুল্ক মওকুফ করেছে এনবিআর। অন্যদিকে চিনির ওপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।

জরুরী বৈঠকে ব্যবসায়ীরা

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ১৭ অক্টোবর রবিবার সকাল ১১.০০টায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মুল্য পরিস্থিতির উপর এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে। বাজার পরিস্থিতির ওপর আলোচনা করতে উপস্থিত থাকবেন চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের আমদানিকারক, আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতিসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির ব্যবসায়ী নেতারা।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি সকল স্তরের জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে। এ বিষয়ে সঠিক সমাধান চাইতে সকল ধরনের ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা বিস্তারিত জানতে চাই। এজন্য জরুরী বৈঠক ডেকেছি।