ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কৌশিকের কাশ্মীরি আপেল কুল চাষের সাফল্য

ছোটন বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০৪:৪০:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাগড়াছড়ির ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা কৌশিক চাকমা'র কাশ্মীরি আপেল কুল চাষে বেশ সাড়া মিলেছে অনলাইন এবং অফলাইনে। তার ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব এ চেঙ্গী এগ্রো ফার্ম নামে এই সাইট টি দেখে অনেকেই  আসেন তার বাগানে বিভিন্ন জাতের কুল সংগ্রহের জন্য। খুবই অল্প সময়ে এই তরুণ উদ্যোক্তা কুল চাষের বেশ সারা মিলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর এ খবংপুড়িয়া চেঙ্গী নদীর কূল ঘেষেই চেঙ্গী এগ্রো ফার্মের দেখা মিলবে। যার আয়তন পায় পাঁচ একর। এ ফার্মে আসলে দেখা মিলবে সারি সারি বিভিন্ন জাতের কুল আর কুল। দেখে মনে হবে এ যেন কুলের রাজ্যে প্রবেশ করলাম।

কৌশল জানান, আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। পড়া লেখা শেষ করে বেকার জীবন অতিবাহিত করছিল সে। এর উপর তার বাবা একজন সামান্য কৃষক। সে কি করবে তা সে ঠিক করতে পারছিলো না। হঠাৎ একদিন সে ইউটিউব এ কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন কুল চাষের ভিডিও দেখে সে অনুপ্রেরণা পায়। এবং সে সিদ্ধান্ত নেই।  সে সূত্র ধরেই ফরিদপুর থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী কুল সহ মিশ্র ফল বাগান করার জন্য প্রায় ১২০০টি  চারাগাছ সংগ্রহ করে।

বর্তমানে তার ৫ একর জমিতে প্রায় আপেল কুলের ৭০০টি চারাগাছ আছে। এক বছরে মাথায় ৪,০০০কেজি আপেল কুল ৩ লক্ষ টাকার বেশি বিক্রি  করে সে। তার লক্ষ্যমাত্রা ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করবে। খরচ বাদ দিয়ে ৯ - ১০ লক্ষ টাকার মত তার লাভ করবে বলে সে আশাবাদী।

ক্রেতা বিজয়া খীসা বলেন, আমি এ ফার্মে এসে নিজের মনের মতো কুল সংগ্রহ করে স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে পেরে আমি খুশী। আর মনে মনে ভাবি, আমি এখন মিনি আপেল রাজ্যে। কুলে’র রাজ্যে কুল সংগ্রহ করার মজাই আলাদা। এছাড়া এখানে প্রতিদিনই আশেপাশের মানুষ ছাড়াও বাইরের অনেক দর্শনার্থীরা আসেন বাগানটি দেখতে। এবং যাওয়ার সময় তারা মনের মত কুল ক্রয় করে নিয়েও যাই।

স্থানীয় চাষি রহমত মিঞা বলেন, আমাদের খাগড়াছড়ি পাহাড়ি এলাকায় এরকম কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ হবে আগে ভাবিনি। শুনেছি কৌশিক নামের ছেলেটা আপেল কুল চাষ করে ভালোই লাভ করতেছে। আমিও আগামীতে কুল চাষ করার জন্য চিন্তা করতেছি।

 

 

 

 

পাশ্ববর্তী এলাকার চাষি সুজন চাকমা বলেন, শুনেছি  কুল চাষে নাকি লাভ আছে। বছর দুই একের মাথায় গাছে কুল আসতে শুরু করে। আপেলের মত দেখতে এ কুলটি খেতেও সুস্বাদু। আমরা ছোট চাষি। যদি কৃষি অফিস আমাদেরকে কুলে’র  চারাগাছ দেয়, তাহলে সামনের বার আমিও কুলের চারাগাছ লাগাবো।

উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খাগড়াছড়ির কৃষি কর্মকর্তা ড. মোঃ সফি উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ১৯৫ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। পাহাড়ের মাটি দোআঁশ মাটি। এ মাটিতে কুল আবাদের জন্য খুবই উপযোগী। কৃষকদের প্রণোদনার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কুলের চারা উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি সাথে সাথে সার,বীজ, কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।

ছোটন বিশ্বাস-খাগড়াছড়ি সদর