ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১
টাঙ্গাইলে নদ-নদীর পানি কমলেও দুর্ভোগে বন্যা কবলিতরা

দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট ও পানিবাহিত রোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৫ জুন ২০২২ ০৪:০৮:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

টাঙ্গাইলের যমুনাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পানিবন্দি এলাকার অসংখ্য মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবের পাশাপাশি বাড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ। চরাঞ্চলে রয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। 

টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভূঞাপুর, নাগরপুর, গোপালপুর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার শতাধিক গ্রামের পানিবন্দি মানুষ অত্যন্ত কষ্টে জীবনযাপন করছেন। জেলায় মোট ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসলও তলিয়ে যাওয়ায় নানা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নদীর পানি সরে গেলে ভাঙণ আরও বাড়বে। ভাঙণ রোধে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।

জেলার কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী, দূর্গাপুর, সল্লা ইউনিয়ন এবং এলেঙ্গা পৌরসভার কিছু অংশের মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের গাবসারা, গোবিন্দাসী, অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে যমুনার পানি ঘর-বাড়ীতে প্রবেশ করেছে। পানির স্রোতে কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে- রান্নার মাটির চুলা, গবাদিপশুর রাখার স্থান, টয়লেট, টিওবয়েলসহ চরাঞ্চলের নানা ধরণের ফসল ও সবজি। পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয়ের জন্য চলে গেছে অন্যত্র। আবার অনেকেই ঘরেই মাঁচায় রান্না করাসহ কষ্টে দিনপার করছেন। বাসাইল ও মির্জাপুরেও বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া, হুগড়া, কাতুলী ও মাহমুদনগর ইউনিয়নে প্রতিবছরই নদী ভাঙণের শিকার হন মানুষ।  এসব এলাকার পানিবন্দীরা বলেন সপ্তাহখানেক ধরে তাদের বাড়িতে পানি ওঠায় অধিকাংশ সময় পানিতেই থাকতে হচ্ছে। দেখা দিয়েছে পানি বাহিত রোগ। বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় নৌকায় দিনে একবেলা রান্না করে তিন বেলা খেতে হচ্ছে। বন্যার কারনে আয়-রোজগার বন্ধ। গবাদি পশুগুলো অন্যের বাড়িতে রেখেছি চোর-ডাকাতের ভয়ে। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় শিশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দোকানগুলোতে অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে। অনেকেই পরিদর্শন করে, সহযোগিতা করে না।

কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ জানান, অসংখ্য মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারিভাবে পাওয়া ত্রাণ সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পানি কমলেও মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি জানান, বন্যার্তদের সরকারি ত্রাণ সহায়তায় দেওয়া হচ্ছে।