ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১

নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের কমিটি থেকে ১৫ নেতার পদত্যাগ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৭ জানুয়ারী ২০২২ ০৬:৪২:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট নবগঠিত কমিটিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

 

নতুন আহবায়ক কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন, মাঠের কর্মীদের বঞ্চিত করে প্রবাসীদের স্থান দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৬ যুগ্ম আহবায়কসহ ১৫ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

 

ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্রের কপি কেন্দ্র, সিলেট বিভাগ ও জেলা যুবদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন এ কমিটির বৈধতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনার ঝড় বইছে; অপরদিকে বিভক্তিকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মূহুর্তে দু’গ্রুপের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।

 

দলীয় সূত্র জানায়, গত ১৩ জানুয়ারী সাবেক ছাত্রনেতা মোশাহিদ আলম মুরাদকে আহবায়ক, সাবেক ছাত্রনেতা অলিউর রহমান অলিকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও ১৬ জন যুগ্ম আহবায়কসহ ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদী যুবদল নবীগঞ্জ উপজেলা শাখা কমিটি প্রকাশ করে জেলা যুবদল। কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষনিকভাবে বিক্ষুব্ধ নেতৃবৃন্দ জরুরী বৈঠকে বসেন।

 

তারা অভিযোগ করেন, কমিটিতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে প্রবাসী ও জুনিয়র নেতাকর্মীদের অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বিদেশী তদবীর এবং অনৈতিক আর্থিক লেনদেনসহ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ত্যাগী ও মাঠের কর্মীদের বাদ দিয়ে অগঠতান্ত্রিকভাবে কমিটি ঘোষনা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

 

এরপর কমিটি থেকে ৩নং যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদীন জয়নাল, ৪নং যুগ্ম আহবায়ক আল আমিন, ৫নং যুগ্ম আহবায়ক সাবেক ছাত্রদলের ত্যাগী নেতা ফোয়াদ হাসান রাজন, ১০নং যুগ্ম আহবায়ক রায়হান বারী, ১৪ যুগ্ম আহবায়ক শাহ লিমন মিয়া, ১৫ নং যুগ্ম আহবায়ক মহসিন তালুকদার, সিনিয়র সদস্য জাহাঙ্গীর চৌধুরী, সদস্য মোঃ হারুনুর রশীদ হারুন, সিনিয়র যুবনেতা শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী রিপন, মোঃ মনির চৌধুরী, কুহিন চৌধুরী, বাছিতুর রহমান চৌধুরী, জাকির হোসেন, রুহুল আমীন শমসের ও আঃ রউফ রুবেল পদত্যাগ করেন।

 

রবিবার (১৬ জানুয়ারী) রাতে হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবরে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিলেট বিভাগীয় টিমের নিকট অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।

 

জানা যায়, পদত্যাগের ৭টি কারণ উল্লেখ্য করা হয়েছে। তা হলো, যুবদলের দীর্ঘদিনের রাজপথের পরীক্ষিত নেতা কর্মীদের বঞ্চিত করে সদ্য ছাত্রদল থেকে আসা জুনিয়র নেতাকর্মীদের কমিটিতে গুরুত্বপুর্ণ পদে পদায়ন করা, কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র সমন্বয় না করে সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়ন করা, প্রবাসে থাকা লোকদের কমিটিতে অর্ন্তভুক্তি করা, মরহুম নেতা জেলা যুবদল সভাপতি মিয়া মোঃ ইলিয়াছ জীবিত থাকাবস্থায় গঠনকৃত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তার মৃত্যুর পর কমিটির সদস্য বৃদ্ধি ও রদবদল করা, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে অচেনা অপরিচিত লোকদের স্থান দেয়া, যারা যুবদলের সম্মেলনে সদস্য হিসেবে আবেদন করেন তাদেরকে যুগ্ম আহবায়ক করা, বিদেশী তদবীর এবং অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেন এর মাধ্যমে তাদের পছন্দ মতো কমিটি গঠন করা।

 

এদিকে, ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থেকে ৬ যুগ্ম আহবায়কসহ ১৫ জন সদস্য পদত্যাগ করায় নতুন কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জরুরী ভিত্তিতে জেলা বা কেন্দ্রীয় যুবদল হস্তক্ষেপ না করলে এ নিয়ে যে কোন সময় সংঘাত-সংঘর্ষ রূপ নিতে পারে।