ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

ব্যাংক খাতের বোঝা উচ্চ খেলাপি ঋণ

বায়ান্ন ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : রবিবার ৯ জুলাই ২০২৩ ০১:৩৫:০০ পূর্বাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

 

ব্যাংক খাতের বোঝা উচ্চ খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণ আদায়ে তদারকি বাড়ানোর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো চলমান রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের জানুয়ারি-মার্চ সময়ের জন্য প্রকাশিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, উচ্চ খেলাপি ঋণ আদায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিদ্যমান ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ সংশোধনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগের তুলনায় ৯ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণ ছিল এটি, যা ওই সময় মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরের শেষে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়ায় মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং মার্চ শেষে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

 

এদিকে চলতি বছর ২১ জুন জাতীয় সংসদে প্রথমবারের মতো ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের সংজ্ঞায়িত করে নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন পাস হয়েছে। আইন অনুযায়ী, ঋণ শোধ করছেন না এমন গ্রাহকদের মধ্যে যারা সামর্থ্য থাকার পরও শোধ করবেন না এবং যারা জালিয়াতি, মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নেবেন, তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এ ছাড়া এক উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়ে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে এবং ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জামানত হস্তান্তর করলেও ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।

ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, টাকার যথেষ্ট অবমূল্যায়ন হয়েছে, যা ব্যাংক খাতের জন্য আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং বিনিময় হারের মতো দুটি গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অর্থনীতি। এখানে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট) ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালের মার্চে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মূলত মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং আবাসিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দাম সমন্বয়ের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দাম ও বিনিময় হার স্থিতিশীল করার জন্য ৩ জুলাই থেকে ডলারের বাজারভিত্তিক দাম চালু করা হয়েছে।