ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১
দৈনিক বায়ান্নকে এম লিয়াকত

শেখ হাসিনার আর্শীবাদের অপেক্ষায় সিলেটের বেকার জনগোষ্ঠী

এমএ রহিম, সিলেট: | প্রকাশের সময় : বুধবার ৩০ মার্চ ২০২২ ১১:৩৭:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

করোনা দুর্যোগের কারণে সিলেটের লাখো মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পূজি হারিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ গলায় পড়েছেন। চারদিকে শুধু বেকারত্ব। অনেকের মুখের দিকে তাকানো যায় না। এভাবে আর কতদিন? কিন্তু অনেকেই আবার আশার আলো দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা ভেবে। জননেত্রীর আর্শীবাদ পেলে সিলেটের বেকার হয়ে পড়া মানুষের কর্মসংস্থান সহজেই সৃষ্টি হবে। শুধু সিলেট নয় অন্যান্য জেলার বেকার জনগোষ্ঠীও কর্মসংস্থান পাবেন সিলেটে। এই অবস্থায় সিলেটের বেকার জনগোষ্ঠী শেখ হাসিনার আর্শীবাদ পাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন। 

 

করোনাকালীন দুর্যোগ ও পরবর্তীতে সিলেটের সার্বিক অবস্থা দৈনিক বায়ান্ন‘র কাছে তুলে ধরেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে রক্ষা করার উপায় নিয়েও তিনি কথা বলেন খোলাখুলিভাবে।

 

তিনি বলেন, করোনাকালীন দুর্যোগ শুরু হতেই দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হয়। লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ধরণের কর্মকান্ড। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানালেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধানের নির্দেশনায় সর্বোচ্চ ত্যাগের মনোভাব নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়েছে। করোনাকালীন দুর্যোগের সময় প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছুটে যেতে হয়েছে। অসহায় মানুষের ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে হয়েছে। সেসময় দেখতে হয়েছে কর্মহীন মানুষের আহাজারি। 

 

বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ধ্বংসের দিকে ধাবিত হতে দেখেছি। অনেকে ঘরে বন্দি হয়ে ব্যবসার পূজি শেষ করেছেন পরিবারের সদস্যদের আহার জোগাতে। করোনাকালীন দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর ওইসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর ব্যবসা খুলে বসতে পারেননি পূজির অভাবে। এখন তাদের পরিবারে আরো বিপর্যয় অবস্থা বিরাজ করছে। 

 

লিয়াকত আলী জানাচ্ছিলেন, করোনা দুর্যোগে লকডাউন নেই। তবে এখনো রয়েছে করোনাভাইরাস। লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়ে সরকার দেশকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালায়। একই অবস্থা সিলেটেও। কিন্তু বেকার হয়ে পড়া লাখ লাখ মানুষ কোনোভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু‘মুঠো খাবার যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেকারত্বের ওই অভিশাপ থেকে লাখ লাখ মানুষকে মুক্তি দিতে পারেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। 

কীভাবে সম্ভব জানতে চাইলে লিয়াকত আলী বলেন, সিলেটের দুটি সেক্টরকে দ্রুত কার্যকর করলে কমপক্ষে ৫-৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এর মধ্যে একটি খাত বন্ধ রয়েছে সুবিধাভোগিদের নানান অপপ্রচারে। এই খাতটি হচ্ছে সিলেটের পাথর কোয়ারি। 

 

তিনি বলেন, সিলেটে ৭-৮টি পাথর কোয়ারি রয়েছে। এসব কোয়ারিতে লাখ লাখ শ্রমিক যুগ যুগ ধরে কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতো। দেশের আশি ভাগ নির্মাণ কাজ হতো সিলেটের পাথর দিয়ে। এখান থেকে সরকার প্রতিবছর কয়েকশ‘ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতো। লাখ লাখ শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা জীবীকার একমাত্র পথ হিসেবে ওই পাথর কোয়ারিগুলোকে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর আগে এসব পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দেয়া হয় কতিপয় গোষ্ঠীর অপপ্রচারের কারণে। পরিসংখ্যানে রয়েছে চলতি বছর ৯ হাজার কোটি টাকার পাথর আমদানী করতে হয়েছে। সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো সচল রাখলে বাংলাদেশের ওই টাকা বিদেশ চলে যেতো না। 

 

লিয়াকত আলী জানান, পরিবেশের অজুহাতে পাথরককোয়ারিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করে পাথর কোয়ারিগুলো সচলে বাধা কোথায়। কোনো বাধা নেই। রাষ্ট্রযন্ত্র ইচ্ছে করলেই পরিবেশ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করে পাথর কোয়ারিগুলো সচল করতে পারে। এই মূহুর্তে কোয়ারিগুলো সচল হলে কমপক্ষে ৩-৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মূহুর্তে মধ্যে কেটে যাবে বেকার সমস্যা। বেকার জনগোষ্ঠী এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্শীবাদ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। 

 

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটে দুইটি ইকোনোমিক জোন করার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে শেরপুরের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তামাবিল অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ এগিয়ে চলেছে অনেকটা ধীর গতিতে। এই দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে কমপক্ষে ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থা সৃষ্টি হবে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন এই অঞ্চলের বেকার জনগোষ্ঠী। এই দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু করতে সিলেটের মানুষ চেয়ে আছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে। 

 

এছাড়া পর্যটন খাতকে সরকার অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। সিলেট হচ্ছে পর্যটন অঞ্চল। এই অঞ্চলে কেউ যদি পর্যটন খাতকে সাজাতে চান, তা সম্ভব হয় না। প্রয়োজনীয় জায়গা পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায়, তা সরকারি। ওই সরকারি জায়গা বরাদ্দ নিতে অনেক অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এই ঝামেলার জন্যে কেউ পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসেন না। যদি পর্যটন খাত সাজিয়ে তোলা যেতো তাহলে এখানেও অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো।