ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

‘হিন্দুদের উপর হামলা চালিয়ে ভারতকে বার্তা দিতে চায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : রবিবার ২ অক্টোবর ২০২২ ০৩:৩২:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্বৃত্তরা নির্বাচনকে সামনে রেখে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে মেসেজ দিতে চায় যে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়।

 

রবিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

 

এ সময় ওবায়দুল কাদের অভয় দিয়ে বলেন, আপনারা ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। এবার আমরা প্রস্তুত আছি। দুর্বৃত্তদের শাস্তি হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সতর্ক আছে আপনারাও কোনো চিন্তা করবেন না।

 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অশুভ চক্র আছে। যারা হিন্দুদের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিতে চায়- এ কাজটা আওয়ামী লীগ করেছে। আওয়ামী লীগের হাতে মাইনোরিটি নিরাপদ নয়- এটা মেসেজ দিতে চায়। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান, শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম-কর্ম করতে দিন। সংলাপ করছেন করুন। এটা আপনাদের নিজেদের ব্যাপার। কিন্তু আমি বলব দুর্গোৎসব দশমী পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দল- আপনাদেরও ভূমিকা আছে। আপনারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিও করব। কিন্তু আমরা এই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবে সহযোগিতাও করব।

 

 

 

এ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকার একাধারে ১৩ বছর ক্ষমতার মঞ্চে আসীন আছে। এই ১৩ বছরে ১৩টি দুর্গাপূজা হয়েছে। ৩০ হাজার পূজা মণ্ডপ হয়েছে। এবার ৩২ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপ। আপনাদের স্মরণ করে দিতে চাই এই ১৩ বছরে মাত্র একটি বার দুর্গাপূজায় সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়িঘর, মন্দির, তাদের ঘরবাড়ি দোকানপাটে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আমি বলতে চাই একাধারে ১১টি দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে হয়েছে। কোনো শান্তি বিনষ্ট হয়নি। কিন্তু গতবার দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটনা ঘটে গেছে।

 

গত বছর দুর্গাপূজায় হামলার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সতর্কতার কিছুটা অভাব ছিল। কোথাও কোথাও রাজনৈতিকভাবে আমরা অসতর্ক ছিলাম, এ কথা সত্য। চৌমুহনীতে ছিল ভয়াবহ অবস্থা। একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানায় চৌমুহনী, কুমিল্লা, রংপুরে যা ঘটেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলছি সারা বাংলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রস্তুত আছে। তারা সতর্ক পাহারায় আছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবার অনেক শক্তিশালী অবস্থানে। তাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

 

সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, হিন্দু ভাই বোনেরা আপনারা ভয় পাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। এবার আমরা প্রস্তুত। দুর্বৃত্তরা, যারা আপনাদের উপর হামলা চালায়, তারা কোনো দলের নয়। তারা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তরা যে দলেরই হোক- তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। বিচার না হলে প্রশ্রয় পাবে। তাদের ব্যাপারে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আজকে পূজা কমিটি আমাকে বলেছে বিচার হয় না। কেন বিচার হবে না? বাংলাদেশের সব অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা করেছেন। এমনকি নিজের দলের লোকেরাও রেহাই পায়নি। যারা হিন্দুদের বাড়িঘরে, মণ্ডপে হামলা করে- যে পরিচয়ই হোক এই দুর্বৃত্তদের ক্ষমা নেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রাখতে এদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

 

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ মহানগরের নেতারা।