বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু শ্রীমৎ উপঞঞা জোত মহাথের (উচহ্লা ভান্তে)কে যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয় সে ম্যাক্সের একাধিক ডাক্তার-নার্সকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ১৭এপ্রিল বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু উচহ্লা ভান্তের মরদেহ আনা হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার-নার্সকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এঘটনায় বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু উচহ্লা ভান্তের মরদেহেরও করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জোরালো দাবী উঠেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয়রা নানা প্রশ্ন তুলে পোস্ট শেয়ার করতে দেখা গেছে। তবে বুধবার রাতে সংবাদটি জানান পর বিষয়টি নিশ্চিত হতে একাধিকবার চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের ম্যানেজারকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, গত ১০এপ্রিল থেকে ১৪এপ্রিল পর্যন্ত বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু শ্রীমৎ উপঞঞা জোত মহাথের (উচহ্লা ভান্তে)কে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের সিসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ডাক্তাররা ১৩এপ্রিল সোমবার তাকে মৃত বলে ঘোষনা করার পর বিকালে রাউজানের খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার ১৫এপ্রিল বান্দরবানে আনার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তাকে আনা হয়নি। তবে উচহ্লা ভান্তের ম্যানেজার শিবু মঙ্গলবার রাতে এপ্রতিবেদককে ১৭এপ্রিল শুক্রবার বান্দরবানে তার মরদেহ আনা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন। খৈয়াখালির স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু উচহ্লা ভান্তের মরদেহ খৈয়াখালিতে নেয়া হলেও কাছে কোন মানুষকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। কাউকে কোন প্রকার ছবিও তুলতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ অন্যান্য ভান্তেদের মরদেহের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ছবি তোলা হয় বা ক্ষেত্র বিশেষে লাইভও দেয়া হয়। স্থানীয়রা দাবী করেছেন, উচহ্লা ভান্তে ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় অবস্থায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিল। তাই এধরণের কর্মকান্ড করছে দায়িত্বরতরা। এদিকে উচহ্লা ভান্তে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে ভান্তের ম্যানেজার শিবু এপ্রতিবেদকের কাছে সরাসরি স্বীকার না’করে বলেন, ভান্তের মরদেহে ঔষদের মাত্র বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মরদেহে যেখানে মেডিসিন ১০% দেয়া হয়, সেখানে তার মরদেহে ৪০ থেকে ৫০% দেয়া হয়েছে।
তিনি ভান্তের মরদেহের কাছে লোকজনকে যেতে না’দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নিরাপত্তার কারণে এটি করা হচ্ছে। তবে সরাসরি বিষয়টি স্বীকার না’করলেও তিনি (শিবু) জানান, লোকজন বলাবলি করছে উচহ্লা ভান্তে ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় অবস্থায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিল। এটি তিনিও শুনেছেন। এদিকে ১৫এপ্রিল বুধবার রাত ৯টা ৪৫মিনিটে অতীশ দীপষ্কর নামে একটি বৌদ্ধধর্মীয় ফেইসবুক ওয়েবসাইট বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি পোস্ট শিয়ার করা হয়েছে। ওয়েবসাইটের শিয়ার করা পোস্টের তথ্যগুলো পাঠকের পড়ার সুবিধার্থে হুবহু তুলে ধরা হলো-(উচহ্লা ভান্তের মরদেহ শুক্রবার বান্দরবান নেয়া হতে পারে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতাল হতে উচহ্লা ভান্তের মরদেহ রাউজানের খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সেখানে অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করে আজ বুধবার ১৫ এপ্রিল মরদেহ বান্দরবান নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হয়নি। সম্ভব হলে আগামী ১৭ তারিখ শুক্রবারের দিকে নেয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গত ১৩ তারিখ লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হলে তিনি ডায়াবেটিক, শ্বাসকষ্ট ও হৃদযন্ত্রের অকার্যকর জনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন। ভান্তের মরদেহ খৈয়াখালী নেয়া হলেও সেখানে কোন মানুষকে কাছে যেতে দেয়া হচ্ছেনা ও কাউকে কোন ছবিও তুলতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ অন্যান্য ভান্তেদের মরদেহের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ছবি তোলা হয় বা ক্ষেত্রবিশেষে লাইভও দেয়া হয়। এদিকে আজ হতে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতাল লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে করোনা ভাইরাসের আলামত পাওয়ার পর সিসিইউতে সেবা দানকারী ১১ডাক্তার ও নার্সকে কোয়ারান্টাইনে নেয়া হয়েছে। সেখানে যাওয়া সম্ভাব্যদের কোয়ারান্টাইনের আওতায় আনা হতে পারে)।