রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে পণ্য নিয়ে ইউক্রেনে যায় বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি‘। হঠাৎ যুদ্ধ শুরু হওয়ায় ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে ২৯ নাবিক নিয়ে আটকা পড়ে বাংলাদেশের শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজটি। গত পাঁচদিন আগেও সেখানে আটকে পড়া নাবিকদের একজন জানিয়েছিল তারা সবাই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সময় পার করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের মনের আশঙ্কাই যেন সত্যি হলো। আটকে থাকা সেই জাহাজে রকেট হামলা হয়েছে। এতে ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের (৪৭) মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে জাহাজের ব্রিজে এ রকেট হামলা হয়। সবার সাহসী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলা হয়েছে। এতে ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান (৪৭) মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া বাকি সবাই ভালো আছেন। সবার সাহসী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে। আল্লাহর কাছে ওদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করি।’
উল্লেখ্য, গত রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাহাজটিতে থাকা নাবিকদের একজন ওমর ফারুক তুহিন জানিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে পণ্য নিয়ে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে যান তারা। তবে যুদ্ধ শুরু হবার পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের জাহাজটি সেখানে আটকা পড়ে। রাশিয়ান সেনারা সাগরে মাইন পুতে রাখায় বন্দর থেকে কোথাও যাওয়ারও সুযোগ নেই তাদের। সেখানে চারপাশে বোমা বিস্ফোরণ, যুদ্ধ জাহাজের ছড়াছড়ি। যেকোনো সময় বোমা বা মিসাইলের আঘাতে তারা প্রাণ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। যেকোন সময় হামলার শিকার হতে পারেন। তাদের আশপাশে থাকা অন্তত পাঁচটি জাহাজ ইতোমধ্যে মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। জাহাজটিতে তারা মোট ২৯ জন নাবিক রয়েছেন বলে জানান তিনি।