ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবলো ঢাকা, ভোগান্তিতে অফিসফেরত মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : বুধবার ৯ অগাস্ট ২০২৩ ০৬:১৪:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

 

 

দিনভর শুকনো আবহাওয়ার পর বিকালের এক ঘণ্টা টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেলো ঢাকা। পানিতে থই থই করছে রাজধানীর নিচু এলাকাগুলো। এতে বিপাকে পড়েছে অফিসফেরত নগরবাসী। একদিকে পানি জমে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, অন্যদিকে পরিবহন সংকট। রিকশা পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে চালকরা। এদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

 

 

আজ বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ ছিল পরিষ্কার। বৃষ্টির কোনও লক্ষণই ছিল না। দুপুরের পরে আস্তে আস্তে আকাশ মেঘলা হয়ে আসে। বিকাল ৪টা নাগাদ শুরু হয় হালকা বৃষ্টি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে বৃষ্টি। বিকাল সোয়া ৫টা নাগাদ বৃষ্টি কমে এলেও ডুবে যায় ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তাঘাট, অলিগলি। এতে বিপদে পড়ে যান অফিস থেকে বের হয়ে আসা সাধারণ মানুষ।

 

বৃষ্টির সময়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলতে দেখা যায় যানবাহনগুলোকে। এসময় বৃষ্টিতে ভিজে গন্তব্যে ছুটতে দেখা যায় পথচারীদের। কেউ রিকশা নিয়ে গন্তব্যে পোঁছাচ্ছেন, আবার কেউ জুতা হাতে নিয়ে ময়লা পানি মাড়িয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন। মোটরসাইকেল অথবা গাড়ি নিয়ে যারা বের হচ্ছেন তারাও পড়ছেন বিপাকে। পানি ও ময়লা ইঞ্জিনে প্রবেশ করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাড়ি।

 

 

এদিকে প্রবল বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শাহবাগ, বাংলামটর, ধানমণ্ডি, মগবাজার, মতিঝিল, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, বেইলি রোড, পল্টন, প্রেসক্লাবের সামনেসহ ঢাকার অধিকাংশ এলাকা। জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি নাকাল হতে হচ্ছে পুরান ঢাকাবাসীকে।

 

রিকশাচালক মহিউদ্দিন রিকশা রেখে দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, তার সারা গা ভেজা। কিছুক্ষণ রিকশা চালিয়ে আর পারছেন না। তিনি বলেন, এই বৃষ্টিতে রিকশা চালানো কঠিন। এরপর রাস্তায় পানি জমা। কোথায় গর্ত, কোথায় কী কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এরপর আবার দুইদিন জ্বরে ভুগছি। দুইদিন কিছুই আয় করিনি। আজকে সকাল থেকে ভালোই ছিলাম এখন যে বৃষ্টি তাতে বিপদে পড়ে গেলাম৷

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা একটা নিয়মিত বিষয়। তবে এখন আর আগের মতো সামান্য বৃষ্টিতেই শহর ডুবে যায় না। জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা খালগুলোসহ করপোরেশনের আওতাভুক্ত নালা-নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করছি। এ ছাড়া কিছু জায়গাতে রাস্তায় নির্মাণকাজ চলমান থাকায় সেখানে কিছু জলাবদ্ধতা হচ্ছে যা কয়েকদিনে ঠিক হয়ে যাবে।

 

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

 

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।

 

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩  ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।