শীতের তীব্রতা যতোই বাড়ছে ততোই বাড়ছে শীতকালীন পোশাকের চাহিদা। ঠাকুরগাঁওয়ে গরম কাপড়ের দোকানে মানুষের ভিড়ই জানান দিচ্ছে শীতের তীব্রতা এখন কতখানি? শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে নামিদামি মার্কেট গুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে শীতকালীন পোশাকের জমজমাট বিক্রি। হাসি ফুটতে শুরু করেছে বিক্রেতার মুখে। ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে লেপ, কম্বল, সোয়েটার, ব্লেজার, হাত-পায়ের মোজা, টুপিসহ নানান ধরনের গরম কাপড়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরম কাপড়ের দাম অনেক বেশি। তাই নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পরেছে ইট পাথরে ঘেরা ঠাকুরগাঁও শহরসহ গ্রামবাংলা। শহরের শীত কিছুটা কম হলেও গ্রাম-গঞ্জে বেড়েছে শীতের দাপট।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩০০ পিচ কম্বল শীতার্ত মানুষের মাঝে বণ্টন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রদের হাতে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে নগদ অর্থ জমা পড়েছে আরও ৫ লাখ টাকা। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল জানিয়ে আরও ২০ লাখ টাকার বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়েছে।
রবিবার (১২ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও শহর ঘুরে দেখা যায়, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের (বড় মাঠ) পার্শ্বে রাস্তার পাশের ফুটপাতে বসেছে গরম কাপড়ের দোকান। এ সব অস্থায়ী দোকানে শীতের পোশাক ক্রয় করতে দেখা যায় নারী-পুরুষসহ নানান শ্রেনী পেশার মানুষের ভিড়।
পোষাক বিক্রেতারা বলছেন এত দিন তেমন শীত ছিলো না,হঠাৎ কয়েক দিন থেকে খুব শীত পড়ছে। শীত থেকে বাঁচার জন্য সবাই শীতের পোশাক কিনতে বাজারে আসছে। সে জন্য আজ সারা দিন দোকানে খুব ভিড় লেগেই আছে। গত এক সপ্তাহ আগেও সারা দিনে বিক্রি হতো তিন থেকে চার হাজার টাকার। কিন্তু এখন সারা দিনে প্রায় ১৮ হাজার টাকার মতো শীতের পোশাক বিক্রি হয়েছে। আরেক বিক্রেতা বলেন, সারা দিন ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। গত এক সপ্তাহে যত বিক্রি হয়নি, এখন তার চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছরেই শীত পড়া শুরু হলে বিক্রিও বেড়ে যায়।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন কাপড়ের যা দাম, তাতে তাদের মতো গরিবের পক্ষে এবার শীতের কাপড় কেনা সম্ভব নয়। তবুও তারা পরিবারের সদস্যদের জন্য সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনেছেন। অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে এখানে দাম তুলনামূলক কম।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত তামান্না বলেন, কয়েক দিন আগেও হাওলাদার মার্কেট থেকে একটি সোয়েটার কিনেছিলাম ৮০০ টাকা দিয়ে। এখন একই সোয়েটারের দাম হাঁকা হচ্ছে ১২শ টাকা। শীতের সঙ্গে বাড়ছে শীতবস্ত্রের দামও।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, হতদরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষের শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।