আবাসিক খাতে গ্যাস সংযোগ চালুর দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এরই মধ্যে এ বিষয়ে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ এবং চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে রিহ্যাব।
আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, আবাসিক খাতে প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে গ্যাস সংযোগ। এর ফলে চরম বৈষম্য তৈরি হয়েছে নাগরিকদের মধ্যে। মূলত গুটিকয়েক এলপিজি (বোতলজাত গ্যাসের সিলিন্ডার) ব্যবসায়ীর স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কার্যত আবাসিক গ্যাস সংযোগ বৈধ উপায়ে বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় অধিকাংশ গ্রাহক অবৈধ উপায়ে গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন। যাতে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। দেশের মোট গ্যাসের ১২ শতাংশ ব্যবহার হয় আবাসিক খাতে। বাকিটা শিল্প ও অন্যান্য খাতে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও পক্ষের কাছে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন ধরে আবাসিক খাতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।
রিহ্যাব নেতারা দাবি করেন, কোনো কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানে একদিনে যে পরিমাণ অবৈধ গ্যাসের ব্যবহার হয়, তা দুই-চার লাখ আবাসিক গ্রাহকের কয়েক মাসের ব্যবহারের সমান। এছাড়া কোনো এলাকায় গ্যাস থাকবে আবার কোনো এলাকায় থাকবে না এটা বৈষম্য। অবশ্যই বৈষম্য দূর করতে হবে। গুটিকয়েক এলপিজি ব্যবসায়ী বিগত সরকারকে প্রভাবিত করে আবাসিক খাতে সংযোগ বন্ধ রাখে।
এ বিষয়ে রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেওয়া এখন অত্যন্ত সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় সব পাড়া-মহল্লায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানে একাধিক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এক পক্ষ। এতে প্রতি বছর সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই কিছু নাগরিক গ্যাস না পেয়ে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
দেশে গ্যাস সংকটের দোহাই দিয়ে ২০০৯ সালে তৎকালীন সরকার আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০১৩ সালের শেষের দিকে আবার সংযোগ চালু করা হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের পর আবার বিতরণ কোম্পানিকে আবাসিকের নতুন আবেদন নিতে নিষেধ করে জ্বালানি বিভাগ। পরে ২০১৯ সালে লিখিতভাবে আবাসিক সংযোগ স্থগিত রাখার আদেশ জারি করা হয়। অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন, আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার পেছনে এলপিজি (বোতলজাত গ্যাসের সিলিন্ডার) ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বড় ভূমিকা রয়েছে।