মানবাধিকার কর্মিরা মানুষ অধিকার বঞ্চিত হলে তা নিয়ে বঞ্চিতের পাশে দাড়ান। কিন্তু যখন মানবাধিকার কর্মি নিজেই বেচে থাকার সকল অধিকার হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন তখনই সমাজের অবকাঠামো সহজে অনুমেয়। মানবাধিকার কর্মি হয়েও মানবেতর জীবন যাপন করছে মানবাধিকার সংগঠনের বায়েজিদ থানা কমিটির সহ সভাপতি আলফাজ মিয়া। নিজের ভিটেবাড়ি ও বেচে থাকার অবলম্বন হারিয়ে উল্টো মামলার ঘানি টেনে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু বেচে থাকার জীবন সংগ্রাম করেন এই মানবাধিকার কর্মি।
জানা যায়, ১৯৯০ সালে মানবাধিকার কর্মি আলফাজ মিয়ার ক্রয়সুত্রে বায়েজীদ থানাধীন শান্তি নগর এলাকায় দুটো বাড়ি ছিল। তার ছেলের সাইবার ক্যাফের দোকান ছিল। পরিবার নিয়ে শান্তির সাথে বসবাস করার সময় ঘটে বিপত্তি। এলাকার অনেকের মানবাধিকার বিষয় নিয়ে কাজ করতে গেলে তাকে পড়তে হয় হুমকির মুখে।
এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মি আলফাজ মিয়া বলেন, ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী চক্রের চাঁদা না দিতে পেরে বাড়িঘর থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে উল্টো মামলার ঘানি বয়ে বেড়াচ্ছেন। শান্তিনগর এলাকায় থাকতে হলে আমাকে প্রতি মাসে এলাকার একটি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম গংকে ৫০০০/- পাঁচ হাজার টাকা করে রশিদ বিহীন চাঁদা দিতে হতো। এলাকা অন্যান্য বসতিদেরও চাঁদার কোন রশিদ দেয়না। আামি হিসাব করেছি ১৯৯০ সাল হতে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মোট ১৬লক্ষ আশি হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। তবু শান্তি হয়নি। এক পর্যায়ে সে আমার কাছে এককালীন ৪লক্ষ টাকা চায়, আমি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িঘর ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। আমিন জুট মিল এলাকায় ব্যাবসা করে সংসার চালানোর জন্য একটি দোকান করি, এই সন্ত্রাসী চক্র দোকান করতে হলে তাদেরকে প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। চাদা দিতে না পারায় অবশেষে আমি দোকান ফেলে চলে আসি। পরে তারা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ভেঙ্গে দেয়। উপায়ান্তর না দেখে এক পর্যায়ে আমি অসহায় হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেচে থাকার জন্য নিজের বাড়িঘর ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে ওয়াসায় একটি ভাড়া বাসায় চলে আসি। পরবর্তীতে আমি এ বিষয়ে ২ জানুয়ারী, ২০২১সালে এস.টি ৩৪০৫/২১ইং এবং গত ২৯এপ্রিল,২০২৩সালে এস.টি ২৭৮৩/২৩ইং মামলা করি। এই মামলা করার পর তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এই দুটি মামলা তুলে ফেলার জন্য অনেক হুমকি ধমকি দেয়। আমি না শুনলে এই মামলাগুলো থেকে উদ্ধার হওয়ার জন্য আমি ও আমার ছেলেদের জড়িয়ে অনেক মিথ্যা মামলা করে। আমি ছাড়াও শফি গংয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতিত অনেক মানুষ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানা ও কোর্টে সি,আর এবং জি, আর মামলাসহ ও শতাধিক জিডি এন্ট্রি করেছে। এখনো কয়েকটি মামলা বিচারাধীন আছে। বর্তমানে অনেক কষ্টে ওয়াশা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করি। কিন্তু সন্ত্রাসী বাহিনী এখানেও আমাকে সুখে থাকতে দেয়না। বিশেষ করে বায়েজীদের শান্তি নগর, মোহাম্মদ নগর বা আমিন জুট মিল ও হামজারবাগ এলাকায় কোন মারামারি, অপহরন, হত্যা ও গুম, অগ্নিসংযোগ হলে আমি ও আমার ছেলেদের মামলায় জড়িত করে দেয়। আমাদের মানসিক ও অর্থনৈতিক হয়রানি করেই যাচ্ছে। আমরা আর পারছিনা। আমি ও আমার ছেলেদের একে একে ৬ টা মামলায় জড়িয়েছে। সর্বশেষ ৩ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখে শান্তিনগর ব্রীজের উপর এক মারামারি মামলায় আমি ও আমার ছেলে আল আমিন, মোশারফ, মোস্তফাকে জড়িয়ে একটি মামলা করেছে। আমি পরিবার পরিজন নিয়ে থাকি দামপাড়া ওয়াসার ১নং গলিতে। আমার ছেলে আলআমিন চাকুরী নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অণ্যান্য সন্তানেরা নিজেদের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত। আমরা কেউই এই মামলায় জড়িত নয়। ঘটনার সময় আমার ছেলে আল আমিন ছিল নরসিংদি। আমাদের বিরুদ্ধে এই সব মিথ্যা মামলা আমি আর সইতে পারছিনা, আমার সম্পৃক্ততা নাই জানিয়ে গত ৩ই সেপ্টেম্বর এই মামলার প্রতিবাদে বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ২য় আদালতে একটি সাধারণ ডায়রী করি। যার তদন্ত দিয়েছে বায়েজিদ থানাকে। আমি আশা করি সঠিক তদন্ত হলে আমি এই সব গায়েবী মামলা থেকে রেহাই পাবো।
এ বিষয়ে শান্তি নগর সমাজ কল্যান সমবায় সমিতি লিঃ সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় তার বাড়ি ছিল শান্তিনগরে, তার ঘরগুলো এলাকার ড্রেনের ভাঙ্গায় পড়েছে। আমি তার ঘরবাড়ি ভাঙ্গি নাই। এলাকায় কোন প্রমান নাই। তার কাছে কোন চাঁদা চাই নাই।