সরকার পতনের একদফা দাবিতে বগুড়া থেকে রাজশাহী অভিমুখি যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের রোর্ড মার্চ শুরুর আগে বগুড়া শহরতলীর এরুলিয়া বাজারে এক পথসভা বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাস আলমগীর বলেছেন, চাল, ডাল, তেল লবণ প্রত্যেকটা জিনিষের মূল্য আকাশচুম্বী। আমাদের মা বোনেরা তাদের ছেলে মেয়েদের একটা ডিম দিতে পারে না তাই না। বিদ্যুতের দাম তিন চারবার করে বাড়ছে, তেলের দাম তিবার চার করে বাড়তেছে। সেই দিকে সরকারে কোন খেয়াল নেই। বলে কিনা দাম ফিকস করে দিয়েছি। দাম ফিকস করলেই কি দাম কমানো যায়। চুরি করতো তোমরা আর বলো যে দাম ফিষ্ট করে দিয়েছি। বন্ধুগণ এই সরকার শুধু দ্রব্যমূল্য দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছে তা নয়, এই রাষ্ট্র পরিচালনা করতেও ব্যর্থ হয়েছে। চোর চোর এতো বড় চোর যে, তারা চুরি করে দেশ কে ফোকলা করে ফেলেছে। চুরি করে আর বিদেশে পাঠায়। বিদেশে বাড়ী ঘর তৈরী করে। আর সবচেয়ে বড় চুরি কোনটি সে হলো আমার ভোটের অধিকার চুরি করে। ২০১৪তে চুরি করেছে ১৮ তে চুরি করেছে আবার ২০২৪ চুরি করার পায়তার করছে। এই ভোট চোরদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। মির্জা ফখরুল আরো বলেন রাজপথ পাহাড়া দিতে হবে। যে কোন মূল্যে এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় থেকে টেনে নামাতে হবে।
বগুড়া-নওগাঁ সড়কে বগুড়ার এরুলিয়া হাটে রোড মার্চ উপলক্ষে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। যুবদল ছাত্রদল ও স্বেচ্চাসেবক দল আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপি’র রাজশাহী বিভাগীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দস তালুকদার দুলু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু,স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাসহ ছাত্রদল. যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপি’র অন্যান্য নেতৃবৃনন্দ এতে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রোড মার্চ বহরের ট্রাক, মাইক্রোবাস , প্রাইভেটকার ও মটরসাইকেলের কারনে আশেপাশের এলাক জুড়ে তীব্র যানজট তৈরীহয়। এতে বগুড়া- নওগাঁ সড়কে সমাবেশ স্থলের এলাকা ঘিরে দীর্ঘ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
বিএনপি’র মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনগনকে জেগে উঠে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে বলেছেন, জেগে উঠুন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে রাজপথে রুখে দাড়াতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। একটাই দাবি ভোটের অধিকার ফিরে পেতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে বলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সাঈদী সাহেবকে’ যে ভাবে জেলে আটকে রেখে এক প্রকার মেরে ফেলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকেও একই উদ্দেশ্যে আটকে রাখা হয়েছে।
এবার মানুষ তাদের ভোটের অধিকার আর চুরি করতে দিবে না। বিশ^ জেনে গেছে গত দু’টি নির্বাচন ভোট চুরি হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আর এখন বিএনপি যাতে ভোটে না আসতে পারে সেজন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা মামলা কারাগরে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করে বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন তার চিকিৎসা আর দেশে করা সম্ভব না বিদেশে চিকিৎসা করাতে হবে বার বার এ কথা বলা হয়েছে। আটকে রাখায় তিনি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি আরো বলেন, জেগে উঠতে হবে, সমগ্র বাংলাদেশকে ঐকবব্ধ করতে হবে। বুকের ওপর চেপে থাকা দানবীয় এই সরকারকে সরিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট চোরদের ছাড় দেয়া যাবে না। রাজপথে থেকে সরকারকে বিদায় করতে হবে। আবার তারা ভোট চুরির পায়তারা করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এই ভোট চোরদের মধ্যে দুর্বুত্ত, সরকারী কর্মকর্তা, আইন শৃংখলা বাহিনীর দলীয় কর্মকর্তারা রয়েছেন। এদের প্রতি নজর রাখা ও জেলায় জেলায় তালিকা করার নির্দেশনা দিয়ে বলেন এদের সঙ্গে বিচার বিভাগের একটি অংশ রয়েছে। নজর রেখে সবার তালিকা করে পাঠানোর আহবান জানিয়ে বলেন, এদের শুধু আমেরিকার ভিসা বাতিল হবে না দেশের ভিসাও বাতিল হবে। তিনি গনতন্ত্র ফিরে আনার আহবান জানিয়ে বলেন তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অর্জন হলেই আন্দোলন সমাপ্ত হবে। সমাবেশ শেষে দুপুর পৌনে বারোটার দিকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে লংমার্চ বগুড়া থেকে যাত্রা শুরু করে।