ঢাকা, শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হাটহাজারীতে বৃদ্ধ সোলায়মানের আত্নহত্যার নিউজ করায় প্রতিবেদককে মামলার হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : শনিবার ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১:৩০:০০ পূর্বাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হাটহাজারীতে বৃদ্ধ সোলায়মানের আত্নহত্যা না হত্যা এই নিউজটি করার পর প্রতিবেদক পুনরায় তথ্যসংগ্রহে  সোলায়মানের ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছে প্রশ্ন করা হলে সে তথ্য না দিয়ে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেয়।  আওলার দিঘী কবরস্থানের পাশে তার পিতা বৃদ্ধ সোলায়মানের বিষ খাওয়ার খবর পেয়ে শ^শুরকে আনতে যাওয়া সাহাবুর সাথে আর কেউ ছিল কিনা জানতে চাইলে সে দাম্ভিকতার সাথে প্রতিবেদককে বলেন, আমি এই বিষয়ে আপনার কাছে বলতে বাধ্য নই। বাবা বিষ খেয়েছে না হিস খেয়েছে তাও বলতে বাধ্য নই। তার বাবার মৃত্যুর সময় মেয়ের জামাই সাহাবুদ্দিনের সাথে যে কাঠ মিস্ত্রি ছিল তার নম্বর চাইলে সে বলে, আপনারা খুজে বের করুন, আমি আপনাকে নম্বর দিতে বাধ্য নই। আপনি নিউজ করে আমাদের হয়রানি করছেন, আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা দিবো। 

উল্লেখ্যযে, চট্টগ্রামের হাটহাজারি থানাধীন ভবানীপুর সংলগ্ন আওলার দিঘির পাড় এলাকার কবরস্থান থেকে বিষ খাওয়া অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল নিয়ে গেলে তার একদিন পর গত ৫ডিসেম্বর মারা যায় বৃদ্ধ সোলাইমান(৭৫)। কবরস্থানের পাশে ধান ক্ষেতের বিলের মাঝে বৃদ্ধ বয়সে সোলায়মান বিষ খেয়েছে না খাওয়ানো হয়েছে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে হাটহাজারী এলাকাবাসীর মাঝে ।

এই গুঞ্জনে প্রতিবেদকের মাঝে সত্যি বিষয়টা জানতে কৈাতহলী হয়ে দৈনিক সাঙ্গু পত্রিকায় নিউজ করি। সে নিউজের পরবর্তী ইনভেষ্টিগেশনে গেলে সোলায়মানের ছোট মেয়ে জান্নাত তথ্য গোপন করে উল্টো প্রতিবেদককে মামলার হুমকি দেয়। 

জানা যায়, এই ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধকে গত ৪ই ডিসেম্বর রাত নয়টায় বিষ খাওয়া অবস্থায় কবর পাড় থেকে উদ্ধার করে তার মেঝ মেয়ের জামাই সাহাবুদ্ধিন প্রকাশ সাহাবু। শশুরকে  ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চার ঘন্টা তার গায়ের ময়লা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাত আনুমানিক ১২টা থেকে ১টার দিকে হাটহাজারী হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে মৃত সোলেমানকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে সে পরেরদিন ভোর ছয়টায় মৃত্যু বরন করেন।

সেই মৃত্যু নিয়ে প্রচুর ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয় এলাকায়। কারন ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ তার বাড়ি থেকে অনেক দুরে যেয়ে কবর পাড়ের পাশে ধান ক্ষেতের বিলের উপর শীতের রাত নয়টায় যেয়ে বিষ খাবে এটা যেন অবান্তর, অন্য দিকে যারা উদ্ধার করতে গেছে তার বিষ খাওয়ার ঘটনা জানার পরও কেন তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে গেল, বাড়িতে নিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বাহানায় ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করলো। তাকে মেডিকেল নেয়ার সময়ও বা মৃতে্যুর পর তার কোন মেয়ে বা স্ত্রী কেন হাসপাতালে যায় নাই। প্রতিবেদকে কাছে একটি ভিডিও আসে যে ভিডিওতে বলছে, আমার মাইয়া জন্নাত আমাকে খুব জ¦ালাচ্ছে। তার জ¦ালায় সে জায়গা বিক্রি করেছে। সে আর সইতে পারছেনা তাই বিষ খাবে। 

শুধু তাই নয়, মেঝ মেয়ের জামাই সাহাবুদ্দিন প্রকাশ সাহাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তার শ^শুড় কবর পাড়ে আছে, শালী জান্নাতের কাছে জানতে পেরে সে একা শ^শুড়কে আনতে যায়, অথচ স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শিদের বরাতে জানা যায়, সেদিন রাতে সেখানে রাত নয়টায় কয়েকজন লোককে কবরপাড়ে অন্ধকারের আবছায় কথা বলতে শুনেছে। যদিও প্রথম প্রতিবেদনের সাক্ষাতকারে সাহাবুদ্দিন বলে কবরপাড় থেকে শ^শুর সোলায়মানকে আনতে সে একা গিয়েছিল, পরে মুঠোফোনে জান্নাতের এক বক্তব্যে জানা যায়, সাহাবুর সাথে তার খালাতো ভাই ছিল, পরে আবার জান্নাত কি বুঝে কথার সুর পাল্টিয়ে মুঠোফোনে বলে সেদিন সাহাবুর সাথে সেখানে স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি মামুন নামেরও একজন লোক ছিল। 

বৃদ্ধ সোলায়মানের বিষ খেয়ে মৃত্যুর পর সন্তান হয়েও তাদের উদাসীনতা, মেয়ের জামাই সাহাবু ও ছোট মেয়ে জান্নাতের প্রথম প্রতিবেদনে দেয়া রহস্যপূর্ন তথ্য, বিষ খাওয়ার সময় থেকে বৃদ্ধ সোলায়মানের মৃত্যু পর্যন্ত তাদের সকল কর্মকান্ডই প্রশ্নবোধক মনে হয়েছে। যার ফলে প্রতিবেদক সঠিক তথ্য সংগ্রহে মৃত সোলায়মানের ছোট মেয়ে জান্নাতকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে সঠিক তথ্য চাইলে সে সঠিক তথ্য না দিয়ে প্রতিবেদককে উল্টো মামলার হুমকি দেয়।