আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি বলেছেন, ৭৫'র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে একটা ষড়যন্ত্র ছিলো। আমরা প্রতিহিংসার জন্যে এ কথা বলছি না, যারা ষড়যন্ত্র করেছিলো তারা বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে এবং দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করেছিলো। তাদের চিহ্নিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এখন আমাদের মুল দায়িত্ব হচ্ছে নতুন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ওই ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের চিহ্নিত করা।আর তা না হলে বাংলাদেশ শান্তিতে থাকতে পারবে না। এসব ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে আমরা আইন করবো। একটি কমিশন গঠন করবো।
আইনমন্ত্রী মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। স্থানীয় সুপার মার্কেট চত্ত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌরমেয়র মোহাম্মদ গোলাম হাক্কানীর সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউছার ভূইয়া জীবনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের ১৭ জন সদস্যের হত্যার বিচার শুরু করেন। কসবার জনন্দিত নেতা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সেই মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নেন এবং আপনাদের সন্তান আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা পরিচালনা সমাপ্ত করেন। দেশবাসী দেখেছে সেই বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের যতোজনকে পেয়েছি তাদের রায় কার্যকর করেছি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের একজন আমেরিকায়, একজন কানাডায় অবস্থান করছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদেরকেও ফিরিয়ে আনতে। যতোক্ষণ আমরা আছি, ততোক্ষণ তাদের এই পৃথিবীতে থাকতে দেবো না। আমরা জেল হত্যা মামলাও শেষ করেছি।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত কখনও জনগণের কাছে আসেন না। তারা রাজনীতি করেন ঢাকার আমেরিকান-ব্রিটিশ দূতাবাস, হেন-তেন দূতাবাসে। তারা মনে করেন, ওই দূতাবাস দিয়ে জনগণের ঘাড়ে ওঠতে পারবে। আপনারা এদের চিনে রাখবেন, এরা জনগণকে দুই পয়সার দাম দেয় না। এরা ক্ষমতায় এলে দেশটাকে বিরান করে দেবে। এরা বলে কেযারটেকার সরকার হতে হবে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রদত্ত রায়ে বলেছে কেয়ারটেকার সরকার আমাদের সংবিধানের সাথে চলে না, এটা অবৈধ। পরে সংবিধানে কেয়ারটেকার সরকারের যে ব্যবস্থা ছিলো তা সংসদে বাতিল করা হয়। আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে যে নির্বাচন হবে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। সংবিধানে পরিস্কার বলা হয়েছে নির্বাচন করার জন্যে যেসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। আর শেখ হাসিনার সরকার দৈনন্দিন কাজ করে যাবে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে রেলপথে ঢাকা থেকে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে অবতরণের পর স্টেশনের সামনে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলেচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অন্ধকারে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে এবং সবসময় মিথ্যা কথা বলে। তারা কখনোই সত্যের ধারে-কাছে হাঁটে না, এমনকি খুন করার পর অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে দেয়। আমি অন্তত পাঁচটি উদাহরণ দিতে পারি। দেশের জনগণকে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন। পরে আইনমন্ত্রী উপজেলার ধরখারসহ একাধিক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। পরে সড়ক পথে নিজ উপজেলা কসবায় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে যোগদান করেন।