ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বগুড়ার শিবগঞ্জে আলুর হিমাগারে অভিযান

৩ মজুতদার আটক॥ দাম না কমলে আলু আমদানির সুপারিশের হুশিয়ারি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের

বগুড়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২১:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

আলুর বাজার নিয়ন্ত্রনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর বগুড়ার হিমাগার গুলোতে মঙ্গলবার অভিযান চালিয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে আলু বাজার মনিটরিং এর জন্য পরিচালিত এই অভিযানে  জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানকালে হিমাগারে ফড়িয়া ও দালাল চক্রের তৎপরতা চোখে পড়ে। অতিরিক্ত মুনাফার জন্য বিপুল আলু মজুদ করায় এসময় ৩ জন আলুর মজুতদার কে আটক করে পুলিশের নিকট সোর্পদ করা হয়। আটককৃতরা হলো- জাহিদ হাসান, শাহ আলম ও রিপন মিয়া।

2-784

তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলেছে বলে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ জানিয়েছে। পরে বিকালে হিমাগার মালিকসহ অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছেন, দ্রুত দাম না কমলে আলু আমদানির জন্য সরকাররের নিকট সুপারিশ করা হবে। সভায় জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

দেশের মধ্যে সবজি উৎপাদন প্রধান এলাকা বগুড়ায় সববেচেয়ে বেশি হিমাগার শিবগঞ্জ উপজেলায়। এখানে জেলার মধ্যে আলু উৎপাদনও বেশি হয়ে থাকে। আলুর বাজার নিয়ন্ত্রনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সকালে উপজেলার মোকামতলায় আলুর হিমাগারে মজুদ ব্যবস্থা পরিদর্শনে যান। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মেজবাউল করিম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ পরিচালক মতলবুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহিমনা আক্তার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতাহার শাকিল, ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম রিজভী ও সিনিয়র মার্কেটিং অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম অভিযানে অংশ নেন। সেখানকার আর এন্ড আর হিমাগার পরিদর্শনকালে বিভিন্ন অসামঞ্জস্য ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের নিকট ধরা পড়ে।

 

2-785

ভোক্তা অধিকার অধিকার সংরক্ষন অদিদপ্তরে মহাপরিচালক সেখানে দালাল ও ফরিয়া ও মজুদদার ও হিমাগার  কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন ও হিমাগারের বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই ও তাদের জিজ্ঞাসা করেন। এসময় দেখা যায় ফরিয়া ও দালালরা মোবাইলে ফোনেই দাম নির্ধারণ করে অতিরিক্ত দামে আলু বিক্রি করে। অধিক মুনাফায় আলুর রাখার কার্ড বিক্রি হয়ে হাতবদল হয়ে যায়। যারা আলু মজুদ করেছেন তারা কোথায় বিক্রি করেছেন এবং কি ভাবে আলু বিক্রি করেছেন সে বিষয়ে বিভ্রান্ত তথ্য দেয়া হচ্ছে বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর জানিয়েছে। অধিক মুনাফার জন্য হাজার হাজার বস্তা আলু হিমাগারে মজুদ করায় ৩ জনকে আটক এবং মান্নান নামে এক মজুতদারের নাম উঠে আসায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া নির্দেশনা পুলিশকে দেয়া হয়েছে বলে ভোক্তা অধিকার জানিয়েছে। অভিযানেরর সময় ওই হিমাগারে ৯৮ হাজার বস্তা আলু পাওয়া যায়। এর মধ্যে আটককৃতদের বিপুল পরিমান আলু রয়েছে। অভিযান শেষে বিকালে বগুড়া জেলা প্রশাসকরের কার্যালয়ে হিমাগার মালিক ও আলুসহ অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক জানান, দেশে প্রয়োজনীয় আলু রয়েছে। কিছু ব্যবসায়ী অবৈধ চর্চা করে দাম বাড়িয়েছে। হিমাগার গুলোতে কৃষকের কোন আলু নেই। হিমাগার গুলো থেকে ম্যানিপ্যুলেট করে আলু বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আলু ব্যবসায়ীদের ভাউচার সংরক্ষনের নির্দেশনা দেন। অধিক মুনাফার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ২/৩ দিনের মধ্যে আলুর দাম না কমলে আলু আমদানির সুপারিশ করা হবে।