ঢাকা, শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৯ প্রতিষ্ঠান পেলো এইচএসবিসি বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৩ মার্চ ২০২২ ১১:৪২:০০ অপরাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

দেশের ৯ প্রতিষ্ঠান পেলো হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। করোনাকালে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং অর্থনীতিতে টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ প্রতিষ্ঠানকে এইচএসবিসি ‌‘দ্বিতীয় বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়।

রোববার (১৩ মার্চ) রাতে ঢাকার হোটেল র‌্যাডিসনে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার আয়োজন করা হয়।

অসনাতন ও উদীয়মান ক্ষেত্রে অবদান ও পণ্য রপ্তানি করে বার্ষিক ৩ ডলারের বেশি আয় করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখায় এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির হাত থেকে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) উজমা চৌধুরী। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বিপণন বিভাগের পরিচালক চৌধুরী কামরুজ্জামান কামাল উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া এবার তৈরি পোশাকশিল্পে এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে প্যাসিফিক জিন্স। প্রতিষ্ঠানটি ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি করছে। সাপ্লাই চেইন এবং ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পে এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে এনভয় টেক্সটাইল। আমদানি-বিকল্প শিল্পে অবদান রাখায় পুরস্কৃত হয়েছে হাতিল কমপ্লেক্স। আসবাবপত্র খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় এ ব্র্যান্ড অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম কুড়িয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখায় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে সামিট করপোরেশন। সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শিল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠান। সাসটেইনেবিলিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মালেক স্পিনিং গ্রুপ। প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক ফাইবার থেকে পোশাক তৈরির জন্য একটি ইকোসিস্টেম সৃষ্টির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব টেকসই ব্যবস্থা নিয়েছে। স্পেশাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ। এছাড়া করোনাকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় আইসিটি ডিভিশনের সুরক্ষা অ্যাপকে দেওয়া হয়েছে জুরি অ্যাওয়ার্ড।

বাণিজ্যমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, এইচএসবিসির হেড অব কমার্শিয়াল ব্যাংকিং মিস অ্যামান্ডা মারফি প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে। প্রাণ বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানিকারক। গ্রুপটি মূলত: ফাউন্ড্রি ব্যবসা দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পিভিসি ফিটিংস, প্লাস্টিক, খাদ্য, পানীয় এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণে বৈচিত্র্য আনে। বিশ্বের ১৪৫ টি দেশে প্রাণের পণ্য বিপণন এবং বিক্রয় নেটওয়ার্ক রয়েছে। গ্রুপটি সরাসরি এক লাখ পচিশ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং আরও পনেরো লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে এ গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রাণগ্রুপের দৃঢ় অধ্যবসায় এবং দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কোম্পানিটি শুরু থেকেই ব্যবসায়িক বৃদ্ধির একটি ব্যতিক্রমী ধারা তৈরি করতে থাকে। বর্তমানে এ গ্রুপের আয়ের ২০ শতাংশ আসে রপ্তানি থেকে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, করোনা মহামারির শুরুতে দেশব্যাপী লকডাউন এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের কারণে আমরা ব্যবসা হারানোর প্রচণ্ড চাপের মুখোমুখি হয়েছিলাম। সহনশীলতা ও দৃঢ় মনোবলের মাধ্যমে এ প্রতিকূল পরিবেশকে মোকাবিলা করেছি। আমরা ব্যবসা সহজীকরণ নীতি বাস্তবায়নে করেছি, যাতে কোম্পানিগুলো সহজেই করোনা প্রতিষেধক এবং অন্যান্য সুরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি আমদানি করতে পারে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, অতিমারির মধ্যেও যেসব দেশের অর্থনীতি এগিয়েছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের যে অর্জন করেছে তা এক কথায় অসাধারণ। ১৯৭১ সাল থেকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়নের সারথি।