যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নাম পরিবর্তনের গুঞ্জন উঠলেও সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের কাছে এখনও অফিসিয়াল কোন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় নি। তবে বর্তমান সরকারের সময়ে বঙ্গবন্ধুর নামে নতুন কোন কিছুর নামকরণ থাকবে কি না এই বিষয়ে শঙ্কা করছে অনেকে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নাম পরিবর্তনের বিষয়টি এখনও অফিসিয়াল কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দৈনিক বায়ান্নকে নিশ্চিত করেছেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান।
ইতোমধ্যে ট্রায়াল ট্রেন চালানো এই সেতু উদ্বোধনের কথা রয়েছে মাত্র ১ মাস পর ২০২৫ জানুয়ারিতে। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সেতুটির ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ উল্লেখ করে আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ আমরা ট্রেন চলাচলের সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এই সেতু রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে চাই। ডিজিটাল কম্পিউটার-বেজড সিগন্যাল ইনস্টল করতে এপ্রিল পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে এই বিলম্বের কারণে রেল চলাচলে সমস্যা হবে না, কারণ সাময়িকভাবে এনালগ সিগন্যাল ব্যবহার করা যাবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৭ হাজার কোটি টাকার এই রেল সেতুর কাজ ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে। এরপর জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এটি চালু হতে পারে। যমুনা সেতুর ৩০ মিটার দূরত্ব রেখে নতুন রেল সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
১৯৯৮ সালে চালু হওয়া যমুনা সেতুতেও পরে রেলপথ যুক্ত করা হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুর কাঠামোগত সমস্যা দেখা দেওয়ায়– ট্রেনের গতি বেশ কম রাখতে হয়। আবার যমুনা সেতুর পূর্ব স্টেশন থেকে ট্রেন সেতুতে প্রবেশ করলে, পশ্চিম স্টেশন প্রান্তে অন্য ট্রেনকে অপেক্ষা করতে হয়। বর্তমানে ২০ কিলোমিটার গতিসীমা নিয়ে গড়ে ৩৮টি ট্রেন যমুনা সেতু পাড়ি দেয়।
প্রথমে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বরে সেতুটির নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ জন্য ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সরকার, যার মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠান জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা দেবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা।
তবে পরবর্তী সংশোধিত প্রকল্পে সময়সীমা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বায়ান্ন/এমএমএল/একে