বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে নিহত ৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রশাসনের গাড়ি চাপায় ও আওয়ামী লীগের গুলিতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পৃথক মামলা করা হয়েছে। নিহত দুই শিক্ষার্থীর স্বজনেরা বাদী হয়ে গত ১২ আগস্ট শেরপুর সদর থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন। এতে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ আসামী করা হয়েছে অন্তত ৫০০ জনের বিরুদ্ধে। ৪ আগস্ট শেরপুরে মোট ৫ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট শেরপুরে অসহযোগ আন্দোলনে রাস্তায় নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুরের দিকে জেলা শহরের খরমপুর মোড় এলাকায় প্রশাসনের পিকআপ দ্রুতবেগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর উঠিয়ে চলে যায়। এসময় গাড়ি চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন আইটি উদ্যোক্তা মাহবুব আলম। তিনি সদর উপজেলার তারাগর কান্দাপাড়া গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে।
অন্যদিকে বিকেলে জেলা শহরের কলেজ মোড় এলাকায় সাধারণ ছাত্রদের বিক্ষোভ চলাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ছানু এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ হুমায়ুন কবির রুমানসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গুলি ছোঁড়ে। এসময় আরও ৪ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। তারা হলেন- জেলা শহরের বাগরাকসা মহল্লার বাসিন্দা তুষার আহমেদ, মীরগঞ্জ মহল্লার মীম আক্তার, শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া খরিয়া কাজিরচর গ্রামের সবুজ আহমেদ ও ঝিনাইগাতী উপজেলার পাইকুড়া গ্রামের শারদুল আশিষ সৌরভ।
এর মধ্যে সবুজ আহমেদের সহোদর ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ছানোয়ার হোসেন ছানু, হুমায়ুন কবির রুমানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও অন্ত ৪০০-৫০০ জনকে অভিযুক্ত করে গত ১২ আগস্ট একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে মাহবুব আলমের মা মাহফুজা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে পৃথক আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে পৃথক এ মামলা দুটিতে এখনো পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
সদর থানার নবগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মামলার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।