ঢাকা, শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায় মাদকের ওপেনসিক্রেট মার্কেট

কাজী হুমায়ুন কবির | প্রকাশের সময় : বুধবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৯:০৭:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকায় এখন মাদকের অভয়ারন্য। জানা যায়, এই এলাকায় মাদক বেচা কেনায় গড়ে উঠেছে ওপেনসিক্রেট মার্কেট। প্রশাসনকে থোরাই কেয়ার করে ভয়হীন ভাবেই চলছে নেশার দ্রব্য ইয়াবা, গাজা ও মদের ব্যবসা। অনেকে এই নেশাদ্রব্য মাদক বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এক সময় দুমুঠো ভাত খেতে যাদের হিমশিম খেতে হতো। এখন তারা এই ব্যবসায় জড়িয়ে লালখান বাজার এলাকায় রাতারাতি কোটিপতি। অনেকে দ্রুত গাড়ি বাড়ি করেও জড়িয়ে আছে এই ব্যবসায়। তাদের এই ব্যবসার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মানসিক কষ্টে আছেন এলাকার সজ্জন অভিভাবকরা। কারন তাদের স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রিরা জড়িয়ে যাওয়া ও নিরাপত্তার শংকায় বিনিদ্র রাত কাটান অনেকে। মাদকে ঝুকছে এই এলাকার স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রি থেকে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী যুবসমাজ। যার কারনে অনেক অভিভাবকের দুশ্চিন্তার কথা জানালেন প্রতিবেদককে। মাদকসেবীরা অনেকেই প্রকাশ্যেই মাতলামী করেন। কাদের সেল্টারে মাদক বিক্রি করছেন এই বিষয়ে জানতে গেলে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য। ব্যবসা করতে যেয়ে কেউ কাউন্সিলরের নাম ব্যবহার করে আবার কেউ এলাকার কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নাম ব্যবহার করে।  

সরেজমিনে জানা যায়, শুধু মতিঝর্নায় ৪টি গ্রুপ মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করেন। তাদের মধ্যে মতিঝর্না এলাকার মানিক, ইয়াবা রাজু, বুতি, মনা, পশ্চিম মতিঝর্নার মাসুদ, আরিফ  জোড়া খা¤বা এলাকার পোল্টা সোহেল, মতিঝর্না ৪নং গল্লির মায়া ও হাসিনার মা ইয়াবা ও মদ বিক্রি করেন। শাহিন, কুহিনুর, রুবেল  ৫নং গলির  চক্ষুনি, সাদ্দাম,  মতিঝর্ণা এলাকার পশ্চিম মাথায় মালেকের ছেলে মাসুদ, বেলাল সওদাগরের ছেলে জুয়েল, খোকা সওদাগরের ছেলে ইমরান, ফাতেমার ছেলে আরিফও মদ ও ইয়াবার ব্যবসা করছেন। ৫নম্বর গল্লির সুমন ইয়াবা ও গাজা, বাটালী হিলের ইয়াবা ব্যবসায়ী কালূ ও মুক্তার, টাঙ্কির পাহাড়ের মাদকের নেশার সাথে জড়িত আরমান পার্সেলে ব্যবসা করে। কয়েকজন বলেন, মতিঝর্না এলাকা বাংলা মদের উৎপাদন কারী এলাকা। এখানের কয়েকজন বাংলা মদ তৈরী করেন এবং দাম কম হওয়ায় অনেক ক্রেতাও পান তারা।

এক সুত্রে জানা যায়, লালখান বাজার কর্নেল হোটেলের মোড় টেস্টার সুমনের সিন্ডিকেট মাদক সেবনের পাশাপাশি ব্যবসাও করছেন। হাই লেভেল রোডের ফিরোজ ও আক্তার, নাছির মদ সেবন এবং বিক্রি করে। তাছাড়া পোড়াকলোনীতে গাজার ব্যবসা চলছে জমজমাট। সন্ধ্যার পর থেকেই গাজার গন্ধে এলাকায় সাধারন জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠে। এলাকার মানুষ এইসবে শ^াস নিতে নিতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে। তবে তাদের সন্তানদের জীবন বিপযস্থ হচ্ছে মনে করেন তারা।

 

লালখান বাজার পশ্চিম বাঘঘোনা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, আমরা মাদকব্যবসায়ীদের কাছে অসহায়। আমাদের বসবাসের পরিবেশ এখন হুমকির মুখে। আমাদের প্রিয় সন্তানদের নিয়েও খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কয়েকজন মাদকসেবী প্রকাশ্যে মাতলামী করে। তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আছে বলে কেউ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেনা। তাদের প্ররোচনায় আমাদের সন্তানরাও অনেকে জড়িয়ে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে এই এলাকারই একজন বলেন, যারা মাদক ব্যবসা করেন, তারা যেন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। তারা আপন পর বুঝেন না। অনেকেই রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছেলাপেলা তাই কিছু বলতে পারছিনা। 

এ বিষয়ে জানতে ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলালকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।