জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রস্তাব করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবিলম্বে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পাশাপাশি শিক্ষক রাজনীতি, কর্মকর্তা–কর্মচারী রাজনীতিও নিষিদ্ধের দাবি জানান বক্তারা। পরে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আলোচনার ভিত্তিতে ছাত্র রাজনীতি চালু হবে কিনা তা ছাত্ররাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান সমন্বয়করা।
প্রতিবিপ্লবকে রুখে দিতে দেশ গঠনের জাতীয় ঐক্যের মতোই ক্যাম্পাসেও ঐক্যের ডাক দিয়ে অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘বিভিন্ন হলে হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে যে কমিটি দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নাই। এখন বিভিন্ন হলে রুম ভাঙা হচ্ছে, দখল করা হচ্ছে- এগুলোকে আমরা প্রতিহত করার জন্য ছাত্রদের আহ্বান করছি। যেকোনও ধরনের অস্থিরতাকে রুখে দিতে যাতে আমরা দ্রুত সংগঠিত হতে পারি, তাই আমরা আমাদের এই প্লাটফর্মকে বিলুপ্ত করছি না।’
এ সময় তিনি বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বৈরাচারী সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেন। অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রপতির কাছে শিক্ষার্থী বান্ধব উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।
জাবিতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘ছাত্রলীগকে আমরা অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য দাবি তুলবো। তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্যান্য ছাত্র সংগঠন জাহাঙ্গীরনগরে রাজনীতির সুযোগ পেলেও ছাত্রলীগকে কোনোভাবে রাজনীতির সুযোগ দেওয়া হবে না।’
১৫ জুলাই রাতের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নে জবাবে আরিফ সোহেল বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা একটি তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছি। ১৫ জুলাই রাতে আমাদের ওপর হত্যা চেষ্টা হয়েছিল। যারা এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হবে।’
দুই জন সমন্বয়কের পদত্যাগের প্রশ্নে আরিফ সোহেল বলেন, ‘তারা মনে করেছে বিপ্লব সফল হয়েছে তাই তারা পদত্যাগ করেছে। কিন্তু আমার মনে করি, বিপ্লব এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাই আমরা আমাদের প্লাটফর্মটি এখনও বিদ্যমান রেখেছি। তবে আমরা তাদের মতামতকে সম্মান করি। সেই সঙ্গে বিশ্বাস করি, এই বিপ্লব ঝুঁকিতে পড়লে তারা আবার আমাদের সঙ্গে এসে লড়াই করবে।’
