ঢাকা, শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
২৯ বছর ধরে কর্মরত একই জায়গায়

নিরাপত্তা প্রহরীর হাতে বাঁশখালীর খাদ্য অফিস!

শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:০২:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মোহাম্মদ ইসমাইল চৌধুরী। বাঁশখালীর চাঁদপুর খাদ্য গুদাম এলএসডি ঘাটের নৈশপ্রহরী। এই নৈশপ্রহরীর হাতেই বাঁশখালীর খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। ২৯ বছর ধরে দাপিয়ে বেড়ানো খাদ্য অফিসের স্টাফ ইসমাইল যে একজন নৈশপ্রহরী তা অফিসের কর্মকর্তা ছাড়া কেউ জানত না। বাঁশখালীতে খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার নিয়মিত না থাকায় ইসমাইলের হাতেই যেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস। গত ৩১ জুলাই তাকে বাঁশখালী থেকে বদলি করা হলেও এখনো সে রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। দিব্যি কাজ কর্ম করছেন একহাতে। মনে হবে তিনিই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা!!
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে বাঁশখালীর চাঁদপুর খাদ্য গুদামে নৈশপ্রহরী পদে যোগদান করেন সাতকানিয়ার মোহাম্মদ ইসমাইল চৌধুরী। চাকরি চাঁদপুর খাদ্য গুদামের নৈশপ্রহরীর হলেও কর্মরত বাঁশখালী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে। বাঁশখালী খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের সব কাজ কর্ম করেন তিনি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিয়মিত না থাকা এবং বদলি ও পরিবর্তন হলেও নৈশপ্রহরী ইসমাইলের কোন বদলি হয়নি। বাঁশখালীতে চাকরির আড়ালে দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে অঢ়েল সম্পদের মালিক বনে যান ইসমাইল চৌধুরী। গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি। এর আগে আরো একাধিকবার বাঁশখালী থেকে তাকে বদলি করা হলেও নানা তদবীরের মাধ্যমে বাঁশখালীতেই রয়ে যান নৈশপ্রহরী ইসমাইল।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাঁশখালী খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নৈশপ্রহরী ইসমাইল একাই অফিস করছেন। আর কোন কর্মকর্তা কর্মচারী নেই। তিনিই অফিসার, তিনিই স্টাফ। একাই চেয়ারে বসে আছেন আর ফাইলপত্র নাড়াচাড়া করছেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বদলি হয়েছে। স্যারেরা আমাকে রিলিজ দিচ্ছেনা। ফাইলপত্র বুঝিয়ে দিয়ে শীঘ্রই চলে যাব।

বাঁশখালী উপজেলার দায়িত্বে থাকা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল হককে ফোন করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে তিনি লোহাগড়ায় আছেন। বাঁশখালী তার অতিরিক্ত দায়িত্ব। নৈশ প্রহরী ইসমাইল ৩১ জুলাই বদলি হওয়ার পরও কিভাবে এতদিন বাঁশখালীতে অফিস করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসমাইল অভিজ্ঞ মানুষ। তাছাড়া বাঁশখালীতে আর কোন কর্মচারী দেয়া হয়নি। অন্য কেউ পদায়ন হলে ইসমাইল চলে যাবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার সুমাইয়া নাজনিন জানান, নৈশ প্রহরী ইসমাইলকে বাঁশখালী থেকে বদলি করা হয়েছে। সে কেন এখনো স্টেশন ত্যাগ করেনি খোঁজ খবর নিচ্ছি।