ঢাকা, শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ বিশখালী’র কমিশনিং অনুষ্ঠিত

সালেহ্ বিপ্লব | প্রকাশের সময় : শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৪:৩৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
ছবি- আইএসপিআর

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় নৌবহরে যুক্ত হয়েছে খুলনা শিপইয়ার্ডে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত আরও একটি যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা বিশখালী’।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) খুলনা নেভাল বার্থে আয়োজিত কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। তিনি জাহাজটির অধিনায়কের নিকট কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। আইএসপিআর

বিশখালী নদীর নামে নামকরণকৃত ‘বানৌজা বিশখালী’ জাহাজটি ১৯৭৮ সালে নৌবাহিনীতে কমিশনিং-এর পর থেকে সকল অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে সফলতার সাথে অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘ ৩৬ বছর দেশের জলসীমার সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকার পর জাহাজটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী হতে ডি-কমিশন করা হয়। পরবর্তীতে খুলনা শিপইয়ার্ডে ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর নতুন করে জাহাজটি নির্মাণের লক্ষ্যে কিল লেয়িং করা হয়। ৪১তম পেট্রোল ক্র্যাফট স্কোয়াড্রন-এর পঞ্চম জাহাজ ‘বানৌজা বিশখালী’ নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। 

WhatsApp-Image-2024-11-30-a-1

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নব সংযোজিত জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫১.৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭.৫ মিটার। জাহাজটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। জাহাজটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং একটি ৪০ মিঃ মিঃ বাফার গান, দুইটি ১২.৭ মিঃ মিঃ হেভি মেশিন গান, মাইন লেইং রেল, অত্যাধুনিক সারভাইলেন্স র‌্যাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত। 

কমিশনিং অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও সক্ষম নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি ভূ-রাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী অপরিহার্য। নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ এক সুদক্ষ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত জাহাজ ‘বানৌজা বিশখালী’ নৌবাহিনীর সক্ষমতার আর একটি মাইল ফলক। নৌবাহিনীর অন্যান্য যুদ্ধজাহাজের ন্যায় এ জাহাজটি দেশের নদী ও সমুদ্রসীমায় চোরাচালান প্রতিরোধ, উপকূলীয় এলাকায় টহল প্রদান, অবৈধ মৎস্য আহরণ প্রতিরোধ, বাণিজ্যিক জাহাজকে জলদস্যুর কবল থেকে নিরাপত্তা প্রদান, মাদকদ্রব্যসহ নিষিদ্ধ বস্তুর অনুপ্রবেশ রোধকরণ, Search and Rescue অপারেশন পরিচালনা করাসহ অন্যান্য অপারেশনাল কর্মকান্ডে নিয়োজিত থেকে দেশ সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বন্দরসমূহের নিরাপত্তা প্রদান, সমুদ্র বাণিজ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা,ব্লু-ইকনোমি বাস্তবায়নসহ দেশের যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলায় নৌবাহিনী সর্বদা নিবেদিত। নৌবাহিনীর নিজস্ব শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে একদিকে যেমন বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে, অপরদিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ‘বায়ার নেভি’ থেকে বিল্ডার নেভি হিসেবে নতুন সক্ষমতায় উন্নীত হচ্ছে। এ জাহাজ নির্মাণ ও কমিশন অনুষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এর আগে মাননীয় নৌবাহিনী প্রধান অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হলে কমান্ডার খুলনা নৌ অঞ্চল তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি চৌকশ দল মাননীয় নৌবাহিনী প্রধানকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের পিএসওগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সামরিক ও অসামরিক বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।