ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ঘোষনার পর থেকে গত ৮ ডিসেম্বর দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়ে ২৪০ টাকায় ঠেকেছিলো। সংকট না থাকলেও অস্থির হয়ে ওঠে নিত্যপণ্যর বাজার। তবে এবার বাজারে দেশী মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহের ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে পেয়াজের বাজারে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম কম হলেও পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দাম এখনো বেশি।
নগরীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজও এসেছে। দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৯০-১১০ টাকা, তবে এর সরবাহ এখনো বাড়েনি। আরো জানা যায়, পুরনো দেশি পেয়াজ ১৬০-১৭০ টাকা এবং চায়না পেয়াজ ১৩০-১৪০ ইন্ডিয়ান নতুন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ ইন্ডিয়ান পুরান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা দরে।
নগরীর দুই নাম্বার গেইট বাজারে জাওয়াদ নামের এক ক্রেতার জানান, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম আকাশ ছোঁয়া।এমন টা অবস্থায় আমারা সাধারণ মানুষ হতাশ, ক্ষুব্ধ আর অসহায়।পেয়াজের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন সম্প্রতি বাজারে নতুন পেঁয়াজ মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় পেয়াজের দাম কিছু টা কমেছে আগের তুলনায়।
নগরীর রেয়াজউদ্দীন বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন,বাজারে যে দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ঢুকেছে, তা পাইকারিতে ৯০-৯৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ও ভারতীয় পেঁয়াজের তুলনায় এর দাম কম। এ জন্য এই ধরনের পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন ,এই সময়ে পুরোনো দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ এমনিতেই কম থাকে। দেখা যায়, আমদানি করা পেঁয়াজের পাশাপাশি নতুন পেঁয়াজ এসে বাজার দখল করে। তবে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার খবরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু যেহেতু নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে, তাতে সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম নেমে আসবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের রবি মৌসুমে মোট দুই লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৫৬ হাজার হেক্টরে এবছর আবাদ করা হয়েছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় আট লাখ টন। দুই-তিন মাস দেশের বাজারে এ পেঁয়াজ থাকে। এরপর মার্চে হালি পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৮ লাখ টন।
দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। সবশেষ অর্থবছরে ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। তবে মাঠ পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত যেতে এক-চতুর্থাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়, কিংবা শুকিয়ে কমে যায়। চলতি বছরের মার্চে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি নিত্যপণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর জুনের শুরুতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম প্রায় ১০০ টাকায় ঠেকলে ৫ জুন থেকে আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৯১ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এর বিপরীতে আমদানি হয়েছে সাত লাখ পাঁচ হাজার ৪৩৭ টন
খাতুনগঞ্জ আরত মালিক সমিতির সেক্রেটারি মোঃ ইদ্রিস বলেন, বাজারে নতুন দেশি পেয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। এই ভাবে সরবরাহ হতে থাকলে পেঁয়াজে দাম আরো কমবে।