ঢাকা, শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ময়মনসিংহ মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত প্রতিক সরকারের পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন গাইবান্ধা মানবিক জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান

সঞ্জয় সাহাঃ | প্রকাশের সময় : সোমবার ১১ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪২:০০ অপরাহ্ন | স্বাস্থ্য

 ময়মনসিংহ মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত গাইবান্ধা ব্রীজরোড কালিবাড়ী পাড়ার বাসিন্দা মেধাবী ছাত্র প্রতিক সরকার (১৮) এর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান।

মেধাবী ছাত্র প্রতিক  সরকার গাইবান্ধা ব্রীজরোড কালিবাড়ী পাড়ার অধির সরকার নাতি ও হোটেল কর্মচারী প্রবীর সরকার ও গৃহিণী বীথি সরকার এর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রথম পুত্র। মেয়ে গাইবান্ধা আসাদুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের  ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে" ব্যাটা মেডিকেলত চাস পায়া চিনতাত ফেলাচে, ট্যাকা পামো কোনটে’" শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি গোচর হলে তিনি- রবিবার সন্ধ্যার পর মেধাবী ছাত্র প্রতিক সরকার এর বাসায় যেয়ে উপহার ও মেডিকেলে ভর্তির জন্য চেক প্রদান করেন। সে সাথে মেডিকেলে পড়ার যাবতীয় খরচ বহন করার আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- এনডিসি এস,এম ফয়েজ উদ্দিন, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান  ঐক্য পরিষদ গাইবান্ধা জেলার সভাপতি রণজিৎ বক্সী সূর্য্য, হেরা কোচিং সেন্টার পরিচালক বিরতি রঞ্জন সরকার, বিশিষ্ট ঠিকাদার প্রদীপ সরকার  বটু, শিল্পী সোমা সেন, এ্যাড: পিযুষ পাল, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক  সহ অনেকে।


পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিক  সরকার গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণীতে জিপিএ-৫, ২০১৯ সালে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫, গাইবান্ধা সরকারি কলেজ হতে ২০২১ সালে জিপিএ-৫ সহ ভর্তি পরীক্ষায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৯২৩ তম স্থান স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রতীকদের একটি টিনশেড ঘর। দুই শতক ভিটায় ওই টিনশেড ঘর ছাড়া আর কোনো সম্পদ তাঁদের নেই। ওই ঘরের বারান্দায় কক্ষ বানিয়ে সেখানে লেখাপড়া করেন প্রতীক।

প্রতীক কুমার ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র। এ কলেজে ভর্তির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।


ময়মনসিংহ মেডিকেলে চান্স প্রাপ্ত মেধাবী ছাত্র প্রতিক সরকার "দৈনিক নতুন দিন" পত্রিকার প্রতিবেদককে বলেন- অনেক কষ্ট করে আমি আজ এ পর্যায়ে এসেছি। আমি একজন চক্ষু ডাক্তার হতে চাই। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। মেডিকেলে ভর্তির চান্স পাওয়ার পর একদিকে যেমন আনন্দবোধ হয়েছে তেমনি দু:শ্চিন্তায় ছিলাম যে টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারব কিনা। কিন্তু গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক স্যার আমার বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা ও উপহার প্রদান করে আমাদের দু:শ্চিন্তা ঘুচিয়ে দেয়ার পাশাপাশি অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং আমার পড়াশোনার দায়িত্বভার গ্রহন করবেন বলে  মতামত ব্যক্ত করেন। আমি এজন্য খুব খুশী ও  স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সে সাথে আমার মতো আরও বিভিন্ন গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীর  পাশে যেন স্যার দাড়াতে পারেন এ জন্য আমি তার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করছি।


প্রতিকের বাবা প্রবীর সরকার দৈনিক নতুন দিন" পত্রিকার প্রতিবেদককে বলেন-
সন্তানের সাফল্যে খুশি হলেও পড়াশোনার আগামী দিনগুলোর কথা ভেবে রাজ্যের দুশ্চিন্তা ভর করেছিল। কিন্তু গাইবান্ধা মানবিক  জেলা প্রশাসক আমার মত একজন গরীবের বাসায় এসে উপহার প্রদান করার পাশাপাশি অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করায় আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সে সাথে তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।

"গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান"   জানান-আমি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সনের মাধ্যমে জানতে পারি প্রতিকের বিষয়টি। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এসেছে। আমি তাদের সাথে কথা বলে প্রতিকের বাসায় উপহার ও মোটা অংকের অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করতে এসেছি এবং তার লেখাপড়ার যাবতীয় খরচের ব্যায় ভার বহন করার জন্য সহযোগীতার হাত  বাড়িয়ে দিলাম। তিনি প্রতিকের উদ্দেশ্য বলেন- তুমি একজন ভাল এফসিপিএস করা ডাক্তার হও এটা আমার প্রত্যাশা রইল। সে সাথে ডাক্তার হয়ে গরীব অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে  চিকিৎসা সহ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সু-পরামর্শ প্রদান করেন।