ঢাকায় খুন হওয়া বাঁশখালীর যুবক বোরহান উদ্দিন মায়মুনকে হত্যার আগে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপন চেয়েছিল খুনিরা। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় মায়মুনকে হত্যা করে রাস্তায় লাশ ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তার পকেটে থাকা এনআইডি কার্ড ধরে ঠিকানা সংগ্রহ করে বাঁশখালীতে পরিবারের কাছে খবর দিলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ গ্রহণ করে পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নিহত মায়মুনের লাশ বাঁশখালী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডস্থ রুহুল্লাহপাড়া এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বোরহান উদ্দিন মায়মুন (২২) কে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত মাইমুন বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদী রুহুল্লাহপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে। ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় তার লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। নিহতের শরীরে আগুনে দগ্ধ হওয়ার ক্ষত চিহ্ন ছিল ।
বাঁশখালী থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বোরহান উদ্দিন মায়মুন এক সময় কারাগারে ছিলেন। কারাগারে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। কারাগারে পরিচয় থেকে তাদের বন্ধুত্ব হয়। পরিচয় সূত্রে সেই বন্ধু জেল থেকে বের হয়ে বাঁশখালীর মায়মুনকে ভাল বেতনে চাকরি আছে বলে খবর দিয়ে ঢাকায় যেতে বলেন। গত সোমবার বোরহান উদ্দিন মায়মুন ঢাকায় যাওয়ার পর থেকে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ ছিল। পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মাঝখানে বৃহস্পতিবার মায়মুনের নাম্বার থেকে ফোন করে পরিবারের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপন চাওয়া হয়। এর পর আবারো বন্ধ হয়ে যায় মায়মুনের মোবাইল। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ বাঁশখালী থানায় বোরহান উদ্দিন মায়মুনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি জানালে পুলিশের সহযোগীতায় মায়মুনের পরিবার ঢাকায় গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় যাত্রবাড়ি থানা থেকে লাশ বুঝে নেন।
নিহতের চাচাতো ভাই কামাল উদ্দিন জানান, খুনি সবুজ আগেও জেলে ছিল। এই যুবকের সাথে আমার চাচাতো ভাই মায়মুনের মাত্র কিছুদিনের পরিচয়। এমনকি জেল থেকে খুনিকে বের করতে তদবির করেন মায়মুন। এই বন্ধুই চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে প্রথমে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা না দেয়ায় খুন করে মায়মুনকে। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় শুক্রবার হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি বাঁশখালী থানাকে অবহিত করার পর আমরা মায়মুনের পরিবারকে খুঁজে বের করি। শুক্রবার রাতে মায়মুনের নামাজে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়।
এদিকে চাকরির নাম করে ঢাকায় সন্তান হত্যার ঘটনার সুষ্ট তদন্ত ও বিচার দাবী করেছে এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার।