রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস)-এর কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে এ সভাটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর একে একে বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেন এবং সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব রাখেন।
নেতারা তাদের বক্তব্যে জিসাসের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন। তারা উল্লেখ করেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে গঠিত এই সংগঠনটি প্রয়াত আবুল হাসেম রানার হাত ধরে সাংগঠনিক রূপ লাভ করে। তার মৃত্যুর পর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তার সহধর্মিণী নাহিদ গুলনার ইভা।
নেতারা স্পষ্টভাবে জানান, নাহিদ গুলনার ইভার নেতৃত্বাধীন জিসাসই বিএনপির সহযোগী সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে একমাত্র স্বীকৃত সংগঠন। তারা সংগঠনের ঐক্য বজায় রাখতে এবং বিভ্রান্তি এড়াতে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনের নামে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা রোধের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জিসাসের সভাপতি নাহিদ গুলনার ইভা। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে জিসাসকে কিভাবে আরও কার্যকর করা যায়, সেই পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আবুল হাসেম রানার মৃত্যুর পর সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে বিএনপির সহায়তায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। তরুণ প্রজন্মের সামনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবন তুলে ধরতে জিসাস বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
নাহিদ গুলনার ইভা অভিযোগ করেন, বিগত ১৮ বছরে তরুণ প্রজন্ম জিয়াউর রহমান সম্পর্কে সঠিক ধারণা পায়নি। কারণ, পাঠ্যপুস্তক ও গণমাধ্যমে তার অবদানগুলোকে উপেক্ষা করা হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শকে তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুনভাবে তুলে ধরতে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।
সভায় জিসাস নেতারা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে বিভিন্ন কর্মসূচির কথা জানান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কর্মশালা, এবং জিয়াউর রহমানের জীবনীভিত্তিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে তরুণদের আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জিসাস শুধু একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন নয়, এটি শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শকে প্রতিষ্ঠার একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা সেই আদর্শকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।
নেতৃবৃন্দ জোর দিয়ে বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টি বা জিসাসের নামে অন্য কোনো সংগঠন তৈরির অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না। তারা প্রত্যেকে ইভার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।
জিসাসের এই কর্মী সভা প্রমাণ করে, সংগঠনটি কেবল সাংস্কৃতিক কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার মঞ্চ হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।
বায়ান্ন/আরএইচ/একে