দালালদের ব্যবহৃত বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন ছাড়া ফাইল নড়েনা এমনকি ফাইল জমাও নেয়া হয়না অনেক সময়। ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগ কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে।
দালালদের কিছু সাংকেতিক চিহ্ন থাকলেই সেই ফাইল দ্রুত জমা নেওয়া হয় আর আনুষাঙ্গিক কাজও দ্রুত সম্পন্ন করা হয়। এতে করে সাধারণ মানুষ ব্যাপক হয়রানী আর ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এমনকি টাকা এবং দালাল ছাড়া পাসপোর্ট জমা নেয়া হয় না।
আবার অনেক ভোগান্তির পর পাসপোর্ট জমা হলেও কয়েক মাসেও পাওয়া যায় না পাসপোর্ট।
চকরিয়া বাঁশঘাটা এলাকার রেহানা বেগম(ছদ্ম নাম) জানান, সে অনার্সে পড়ালেখা করছেন। তার বয়স ১৮+ হলেও এনআইডি কার্ড না হওয়ায় প্রথমে ডিডি'র ওখানে সমস্যা হলেও তাকে বুঝিয়ে কোনমতে স্বাক্ষর নিয়ে ফিঙ্গার দিতে বলেন। ফিঙ্গার দিতে গিয়ে সবুজ নামের ঐ কর্তা আবারও আটকে দেয়। তখন রাগ করে ফিরে আসার সময় অফিসের ভিতরে এক ভদ্রলোক আমাকে ডেকে সমস্যার কথা জিজ্ঞাসা করে। আমি সব খুলে বললে তিনি বলেন ২০০০ টাকা দাও আমি ফিঙ্গার নিয়ে দিব। তখন বাধ্য হয়ে তাকে ২০০০ টাকা দেওয়ার পর তিনি ১৫ মিনিটের মধ্যে ফিঙ্গারের ব্যবস্থা করে দেন।
কক্সবাজার সদরের লারপাড়ার মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমি উমরাহ হজ্জ পালনে যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ডকুমেন্টস নিয়ে পাসপোর্ট জমা করতে গেলে সেখানে আমাকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ফাইল ফেরত করে দেয়। পরে নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলে, এখানে দালালদের মাধ্যমে আসা ফরম গুলো আগে জমা নেওয়া হয়। এমনকি তাদের লাইনও আগে ধরিয়ে দেওয়া হয়। কারন প্রতিটি ফাইলে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে ঘুষ নেয় তারা। আবার সে সব ফাইলে সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়া আছে। সে জন্য কর্মকর্তারা বুঝতে পারে কোনটি ঘুষের ফাইল আর কোনটি ঘুষ ছাড়া।
কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আসা অনেকে বলেন,আমি ফজরের নামাজের পরে লাইনে দাঁড়িয়ে কোনরকম ফাইল জমা করতে পারলেও পরিপূর্ণ কাজ করতে পারিনি!পরের দিন আবার এসে দেখি সেখানে তাদের কিছু নির্দিষ্ট লোক আছে তাদের ছবি তুলা হচ্ছে। একটি পাসপোর্টের ফাইল সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে প্রায় ৩/৪ দিন আবার অনেকে ৭ দিনেও পারে না।নানান হয়রানি অতিক্রম করে পাসপোর্ট ফাইল জমা হলে পাসপোর্ট পেতে সময় লাগে ১/২ মাস। তবে সবচেয়ে বেশী হয়রান ফিঙ্গার নিতে গিয়ে।
এ ব্যপারে সচেতন মহল বলেন,পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম দূর্নীতি মানুষের মুখে মুখে কিন্তু এবিষয়ে কেউ কঠোর পদক্ষেপ নেয় না। ফলে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবা প্রার্থীরা।এসব বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এ-বিষয়ে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোবারক হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অনেকে রোহিঙ্গা নিয়ে এসে পাসপোর্ট করতে না পারায় তারা এমনটি বলছে। তবে রোহিঙ্গাদের কারনে এখানে পাসপোর্ট করতে একটু সমস্যাও আছে। বিভিন্ন তথ্যাদি যাছাই করতে হয়।