ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

থানায় ছাত্রলীগ নেতা নির্যাতনসহ ৩ কর্মকর্তার দায় পেয়েছে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৯:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

 

রাজধানীর শাহবাগ থানায় আটক রেখে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধরের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গঠিত তদন্ত কমিটি। ওই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের দায় ছিল, তবে এর নেপথ্যে দায় ছিল এডিসি সানজিদা ও রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হকেরও। ছাত্রলীগ নেতাদেরও মিলেছে সংশ্লিষ্টতা।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, প্রথমে তদন্ত শেষ করতে না পারায় আমরা সময় নিয়েছিলাম। দায়ী ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। ঘটনার তদন্তে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া সব কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যার যতটুকু দায়-দায়িত্ব ও সংশ্লিষ্টতা ছিল তা উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 

কার কার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আমরা ডিএমপি কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবো।

 

উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করেন পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ।

 

 

ভুক্তভোগী দুজন হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। 

 

ওইদিন রাতে নারীঘটিত একটি ঘটনার জেরে শাহবাগ থানায় তাদের নির্যাতনের পর মারধর করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে ঘটনা মীমাংসা করেন।

 

 

নির্যাতনের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার মুখে হারুন অর রশীদকে প্রথমে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। ঘটনার তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলেই ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নির্দেশে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান ডিএমপি সদর দপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) আবু ইউসুফ। কমিটির দুই সদস্য হলেন, রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) শাহেন শাহ এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ) রফিকুল ইসলাম।

 

এরমধ্যেই হারুনকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি আদেশ জারি করে ডিএমপি। তবে ওইদিন বিকেলেই পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে এপিবিএন-এ বদলি করা হয়।

 

তবে ১১ সেপ্টেম্বর বদলি করা এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। এর একদিন পর আবার রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয় এডিসি হারুনকে।