
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রামে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের আয়োজনে চেরাগী পাহাড় থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা মোড়, লালদীঘী হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হয়। বক্তারা সরকারের প্রতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
দাবিগুলো হলো:
১. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন
২. পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক শাসনের স্থায়ী অবসান
৩. আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে ক্ষমতায়ন করে স্থানীয় শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা
৪. ভূমি সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমি কমিশন গঠন ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা
৫. পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসীদের মূলধারার অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্তর্ভুক্ত করা
৬. ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের ভূমি পুনর্বাসন নিশ্চিত করা
৭. সমতলের আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড শাহ আলম বলেন, "২৮ বছর পার হলেও সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে। পাহাড়িদের ভূমি সমস্যার সমাধানে ভূমি কমিশন কার্যকর না করায় সংকট আরও বেড়েছে। সামরিক উপস্থিতি পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে তুলছে।"
বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, "আমরা চাই না পাহাড়ে আবার শান্তিবাহিনী গড়ে উঠুক। অন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিত সাত দফা বাস্তবায়ন করে পাহাড়িদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।"
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুল রশিদ ফিরোজ বলেন, "পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী সবসময় ভয়ের মধ্যে রয়েছে। সংবিধানে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের অধিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।"
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়ক জাকির হোসেন বলেন, "দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরি। সরকারকে এই চুক্তিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।"
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক শাহা সমাপনী বক্তব্যে বলেন, "অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি করতে হবে।"
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে সাত দফা উত্থাপন করে চট্টগ্রামের রাজপথে এ কর্মসূচি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আন্দোলনকারীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত চুক্তি বাস্তবায়ন করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের বঞ্চনা দূর করার জন্য।
বায়ান্ন/এএস