উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও বাড়তে শুরু করেছে তিস্তার পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নীলফামারী ও লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। এতে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। প্রবল পানির চাপে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারীর শৌলমারী চরের সামছুল মিয়া বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ বন্দি হয়ে পড়ে। তিস্তা পাড়ে রাত থেকে পানি বাড়ছে। বন্যার আশঙ্কা করছি।
ডিমলা উপজেলার ঝাড়সিংহেশ্বর এলাকার আফজাল হোসেন বলেন, পানি বাড়লেই পুরো এলাকা বন্যায় ডুবতে থাকে। কয়েকদিন নদী শান্ত ছিল। এখন হু হু করে তিস্তায় পানি বাড়ছে। ত্রাণ নয়, নদী খনন করে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা উচিত।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, জুন-জুলাই মাসজুড়ে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে ছিল। কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি কম থাকলেও গতকাল রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ সকাল ৯টায় নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। দুপুরের দিকে পানি কমে যেতে পারে।