সিলেট নগরীর একটি ওয়ার্ডেই ৬টি ইটভাটা রয়েছে। এলাকাটি হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩১ নং ওয়ার্ড। নদীর কোল ঘেঁষে এই ওয়ার্ডের অবস্থান যখন ইউনিয়ন পর্যায়ে ছিল, তখন ইটভাটাগুলো স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন ধরে এই ইটাভাটাকে কেন্দ্র করে এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। এলাকাটি সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত হওয়ার পর স্থানীয়রা আশা করেছিলেন ইটভাটাগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু এক বছরের অধিক সময় অতিক্রম হওয়ার পরও ইটভাটাগুলো সরিয়ে না নেয়ায় সাধারণ মানুষের মনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে সিটি করপোরেশনের আওতায় আসার পর দুই বছরের মধ্যে ইটাভাটাগুলো স্থানান্তর করতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদশক পূর্বে ৬টি ইটভাটা বর্তমান সিটি করপোরেশনের ৩১ নং ওয়ার্ডে স্থাপন করা হয়। ইটভাটাগুলো হচ্ছে ফখর মিয়ার মালিকানাধীন এফবিএফ ব্রিক ফিল্ড, আবদুস সালাম গেদাইয়ের মালিকানাধীন ফেসকো ব্রিক ফিল্ড, হাজি দিলওয়ার হোসেনের মালিকানাধীন ডিএইচবি ব্রিক ফিল্ড, মকবুল হোসেনের মালিকানাধীন এমএইচবি ব্রিক ফিল্ড ও ফেরদৌস আহমদের মালিকানাধীন এআরবি ব্রিক ফিল্ড। এসব ইটভাটা স্থাপনের পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ দুষণের সম্মুখিন হন। ফলে তারা ইটভাটার পরিবেশ দুষণ নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু ফলাফল আসেনি।
স্থানীয়রা জানান, এসব ইটভাটায় মাটির যোগান দেয়ার জন্যে স্থানীয় সুরমা নদী থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকে। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মাটি উত্তোলন করায় সুরমা নদীর ভাঙ্গনে পড়ে অনেক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। আজো অনেক ঘরবাড়ি ঝুঁকির মধ্যে আছে। বছরখানিক পূর্বে এই এলাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় আসে। এর পর থেকে স্থানীয় নাগরিকরা আশ^স্ত হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন ইটভাটাগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু তার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটা থাকা অবৈধ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন বিশেষ গোষ্ঠী ইটভাটাকে কেন্দ্র করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ ফাও ইট পাওয়ার চেষ্টা করছে। জনপ্রতিনিধির নাম ভাঙ্গিয়ে একজন প্রাইভেট গাড়ি দাবি করেছেন। আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে চাঁদাবাজের।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় পরিচালক এমরান হোসেন দৈনিক বায়ান্নকে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশন হওয়ার দুই বছরের মধ্যে ইটভাটা স্থানান্তর করতে হবে। ইতোমধ্যে এক বছর কেটে গেছে।
বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়ার আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
