বাংলাদেশ কোনো ধরনের ‘প্রক্সি ওয়ারে’ যুক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, আমরা সব সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই।
তাই কোনো ধরনের ‘প্রক্সি ওয়ারে’ যুক্ত হবে না বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
‘প্রক্সি ওয়ার’ বা ‘ছায়া যুদ্ধ’ হলো দুটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের মধ্যে এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে কোনও পক্ষ সরাসরি আক্রমণ বা অন্যের প্রতি সামরিক শত্রুতা স্বীকার করে না। কিন্তু ছোট ও শক্তিশালী রাষ্ট্র বা সশস্ত্র মিলিশিয়া তাদের জন্য লড়াইয়ে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অর্থাৎ সোজা কথায় কোনো বড় শক্তির বিরুদ্ধে অন্য একটি বড় শক্তির দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার পরিস্থিতিকেই ‘প্রক্সি ওয়ার’ বলে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে, কোনো পরামর্শ দিলে আমরা তাদের স্বাগত জানাই।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা কোনো ধরনের চাপে নেই। যারা চাপে আছে, তারা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। আর নির্বাচন নিয়ে কারো মাতব্বরি আমরা সহ্য করব না।
ড. মোমেন জানান, ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন।
সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ এর আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি-খাদ্যপণ্য-সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার মতো যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবিলার বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য তুলে ধরবেন।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্জিত অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ব নেতাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।
ড. মোমেন আরও জানান, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এ দুটি অধিবেশনের মাঝে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের একাধিক নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে মিলিত হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন।
এরপর তিনি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন। সম্মেলন শেষে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরবেন।