ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
এ যেনো সর্ষের মধ্যে ভূত

গাজীপুরে মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী দিয়ে মাদক নির্মূল কমিটি

মোঃ রেজাউল করিম মজুমদার, গাজীপুর : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৫ অগাস্ট ২০২৩ ১২:৪০:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
মাদক বিরোধী আন্দোলনে জনগণের জানমাল, সুরক্ষাসহ সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে যারা অঙ্গিকারাবদ্ধ তারাই যদি হয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসা সেবনকারী একাধিক চুরি, ছিনতাই ও হত্যা মামলার আসামী তখন তাদের রুখবে কে? এমন প্রশ্ন এখন সচেতন মহলের।
 
সর্ষের ভেতরে ভূত রেখে যেমন ভূত তাড়ানো যায় না, ঠিক তেমনি মাদক যারা রোধ করবে তারাই যদি মাদকের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে মাদক ব্যবসা রোধ করা কখনোই সম্ভব না।
 
জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই এলাকার শান্তি শৃঙ্খলার লক্ষ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর ২৭ নং ওয়ার্ড লক্ষীপুরা এলাকায় ভূইফোঁড় মাদক নির্মূল কমিটি গঠন করে এবং নিজের ইচ্ছে মতো মনগড়া মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রকাশ করেন কাউন্সিলর জাবেদ আলী জবে।
 
অথচ সেই কমিটিতে স্থান পায় চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রনকারী, স্থানীয় পর্যায়ের মাদক বাণিজ্যে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া মাদক ব্যবসাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হোসেন আলীর ছেলে অস্ত্র ও মাদক মামলার আসামী তৌকির তালুকদার, জলিলের ছেলে রনি, বাবুলের ছেলে মাদারি সোহেল, দুলাল মিয়ার ছেলে রিপন, আজিজের ছেলে হৃদয় এরা সকলেই মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী।
 
তারা প্রত্যেকেই এলাকায় ঘৃণ্য অপরাধের সাথে জড়িত। নিজেরাই রক্ষক হয়ে মাদক নির্মূলের নামে ভক্ষকে পরিনত হয়েছে। এলাকায় মাদক নির্মূলের নামে নিরিহ ব্যক্তিদের ধরে এনে মারপিট করে টাকা পয়সা আদায়, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রফাদফার নামে হয়রানী করে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত তৌকির তালুকদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
 
এ নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়েছে। এক কথায় তৌকির তালুকদার মাদক ব্যবসায়ী হয়ে এলাকায় মাদক নির্মূলের নামে রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। কেউ কিছু বললেই তাদের ওপর নেমে আসছে হুমকি ধামকি ও নির্যাতন। অভিযোগ রয়েছে কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় তৌকির তালুকদার তার মাস্তান বাহিনী দ্বারা যাকে খুশি তাকে ধরে বেধে আটকে রাখেন এবং নানারকম নিপিড়ন নির্যাতন চালান।
 
তার কাছ থেকে মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নিরিহ লোকজন কারো যেনো রেহাই নেই। অথচ সে মাদক ব্যবসায়ী তার হাতে নিরিহ লোকজনই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হন। তার বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগের ছড়াছড়ি, কিন্তুু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সাহসও যেনো কারো নেই। এলাকাবাসী বলছেন, ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজে কমিটির দায়িত্ব যাদের হাতে তুলে দিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত, মসজিদের দানবাক্স চুরি, লুটপাট, ছিনতাই হত্যাসহ দাগী আসামী এবং মাদক সেবনকারী কমিটির সবাই। এদিকে মাদক নির্মূল কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউল ইসলাম বলেন, কমিটির বিষয়ে আমি অবগত নয়, তবে কমিটিতে থাকা যাদের অভিযোগ তাদের বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপকর্মের ফল হিসেবে অবশেষে লক্ষিপুরার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সেই তৌকির ৫০০ গ্রাম হিরোইন সহ  উত্তরা পশ্চিম থানায় গ্রেফতার।