ঢাকা, শুক্রবার ৩ মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার পরিদর্শন

দিগপাইতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে বিক্রিত ভূমি বেদখলের অভিযোগ

কামরুল হাসান, জামালপুর : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:২৭:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে বিক্রিত ভূমি বেদখলসহ ঘর, নির্মাণসামগ্রী ও গাছ পালা কেটে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দিগপাইত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রতন কুমার দে ১ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ভূমি ক্রেতা গত ৪ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি অবগতির জন্য পুলিশ সুপার, ওসি সদর ও আইসি নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রকে অনুলিপি দিয়েছেন। এছাড়া ১২ মার্চ একই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর পৃথক আরেকটি আবেদন জমা দিয়েছেন। বিষয়টি অবগতির জন্য দিগপাইত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার নিকট অনুলিপি দেন।  

ক্রেতা শেখ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবঃ সার্জেন্ট (একাউন্ট্যান্ট) সেনা সদস্য। সুদীর্ঘ ২৫ বছর চাকুরীর পর পেনশনের টাকায় জামালপুর সদর উপজেলার ১৪নং দিগপাইত ইউনিয়নের রঘুনাথপুর দিঘুলী গ্রামের মৃত আঃ হাকিমের ছেলে (দাতা) মোঃ আনোয়ার হোসেন ওরফে বাদশা (৪৫)-এর নিকট থেকে ১৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। বিগত ২০১৬ সালের ২৮ জুন সাব রেজিঃ অফিস জামালপুরের সাব কওলা দলিল নং ৮৮৩৩ মূলে এসএ/আরওআর ২৩২ নং দাগ, আরএস/বিআরএস ১১৮৫ নং দাগের ১৫ (পনের) শতাংশ ভূমি ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকায় ক্রয় করেন। এ ছাড়া ভূমিতে অবস্থিত স্থাপনা ও বৃক্ষাদি বাবদ ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকায় ক্রয় করেন। উল্লেখ্য তিনি উক্ত ভূমি ও স্থাপনা এবং গাছ পালা ক্রয় করে নেয়ার পর হতে ভোগদখল করে আসছিলেন। তার উক্ত ভূমিতে ৩০ হাত ঘর নির্মাণ করার জন্য মালামাল নিয়ে ভূমিতে থাকা ২২ হাত টিনের ঘরে রাখেন। তিনি তার ব্যবসায়িক কাজে ও বাড়ী নির্মাণ কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিবাদী পর্যায়ক্রমে ভূমিতে থাকা গাছপালা, ঘর ও ঘর নির্মাণের মালামাল অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পরে তিনি লোক মারফত জানতে পেরে ০৩ মার্চ ২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:৩০ ঘটিকার সময় ঘটনাস্থলে তার ক্রয়কৃত ভূমিতে গিয়ে উপরোক্ত অবস্থা দেখতে পান। এমতাবস্থায় তিনি বিবাদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার একান্ত প্রয়োজন মনে করছেন। বিধায় তিনি সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্মকর্তাগণের দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে ১৪ মার্চ নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুল হক প্রাথমিক তদন্ত করেছেন। ১ এপ্রিল দিগপাইত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রতন কুমার দে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মোস্তাফিজুর রহমানের ক্রয়কৃত জমিতে দাতা বাদশা মেম্বার ঘর ও ঘরের মালামালসহ গাছপালা লুট করে পরিকল্পিতভাবে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। মসজিদের সামনের একটি সাইনবোর্ড থেকে জানা যায়, এটি রোপনাথপুর মেম্বার বাড়ী জামে মসজিদ। ওয়াকফকৃত জমির পরিমাণ ৪০দ্ধ৩৩ ফুট। এমনকি ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি বাদশা মেম্বার নিজেই। সেক্রেটারী হলেন তার চাচাতো ভাই আব্দুছ ছামাদ। এখানে একটি কথা স্পষ্ট বলে রাখা দরকার- ওই গ্রামটির প্রকৃত নাম রঘুনাথপুর দিঘুলী (বড়ভিটা)। যা যুগ যুগ ধরেই পরিচিত। অথচ বাদশা মেম্বার মনগড়া ভাবেই রোপনাথপুর নামকরণ করে বসে আছেন। এ ছাড়া তিনি বিক্রিত জমি দাতাকে দখল দিয়ে আবার নিজেই মসজিদের নাম করে তা বেদখল করেছেন। এখানে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- ওয়াকফকৃত ৪০দ্ধ৩৩ ফুট পরিমাণ জমির ওয়াকফদাতাই বা কে? যেহেতু বাদশা মেম্বার ওই জমি নির্দিষ্ট করে ক্রেতাকে দলিল সম্পাদন করে দিয়েছেন। এ ছাড়া ওই মসজিদ কমিটির সভাপতিও তিনি নিজেই। সবশেষে এই দাড়ালো যে, আনোয়ার হোসেন ওরফে বাদশা মেম্বার বিক্রিত জমি জবরদখলের মাধ্যমে আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি।