ঢাকা, শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বন্ধ হোক : চাল নিয়ে চালবাজি!

Author Dainik Bayanno | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

২৬ মার্চ ছিল মহান স্বাধীনতা দিবস। এ জাতীয় দিবসের বিকেল বেলার ঘটনা। জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত উপ-শহরে একটি চাল বোঝাই ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট, ২২-৯১৮০) আটক করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় সংবাদ কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ঘন্টা খানেক পরে মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার মনির ও চাল ব্যবসায়ী সোহেল মিয়াকে ট্রাকটির আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখা যায়। পরে মহাদান ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামের এক যুবক বিষয়টি ম্যানেজ করতে খুবই তৎপর ছিল। এক পর্যায়ে স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, দালাল ও কতিপয় সংবাদ কর্মীকে আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে ম্যানেজ করা হয়। পরে তারাই ট্রাকটি নিরাপদে দিগপাইত উপ-শহর এলাকা পাড়ি করে দেয়। প্রথমে কয়েকজন সংবাদকর্মী সরিষাবাড়ি থেকেই ট্রাকটির পিছু নেয়। তাদের ধাওয়ায় চালক দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে। পরে মোবাইলে দিগপাইতে বিষয়টি জানালে স্থানীয়রা আটক করে। লোকমুখে জানা যায়, ট্রাক বোঝাই চালের মালিক সরিষাবাড়ী আরামনগর বাজারের চাল ব্যবসায়ী নন্দ বাবু। আর ট্রাকটি টাঙ্গাইলের মধুপুরের এক মালিকের। এ ঘটনায় স্থানীয় সচেতন মহল চাল বোঝাই ট্রাকটি আটক করার জন্য আটককৃতদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি সংবাদ কর্মীদের ভূমিকার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে ওই মহলটি। তাই প্রবীণ ব্যক্তিরা ট্রাক বোঝাই চালের বিষয়টি অর্থাৎ কিসের চাল, উৎস কোথায়, মালিক কে? প্রভৃতি বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য খাদ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরসহ উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন। ‘স্বর্ণকাররা মায়ের স্বর্ণও চুরি করে’ এ বদনামটি নিয়ে সারাজীবন বেঁচে থাকে। অথচ আমাদের দেশের প্রায় সবাই মায়ের গহনা চুরি করে বিক্রিলব্ধ টাকায় মুরালী খেয়ে নাচে। এখানে দেশ মাতৃকার সম্মান/সম্পদকে অলংকার বা গহনা আর মুরালী এক প্রকার মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বুঝানো হয়েছে। তাইতো কবি আল মাহমুদ তার ‘নোলক’ কবিতায় সেদিকেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অপরদিকে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরিষাবাড়ী উপজেলার ৩৭ হাজার ৫৯৭ দুস্থ মানুষের জন্য ৩৭৫ টন চাল বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে সাতপোয়া ইউনিয়নে ৫ হাজার ১৭৪টি, পোগলদিঘায় ৬ হাজার ৭৬৪টি, ডোয়াইলে ৫ হাজার ৫৬৫টি, আওনায় ৪ হাজার ৪২৮টি, পিংনায় ৪ হাজার ২৬৩টি, ভাটারায় ৪ হাজার ৩০৬টি, কামরাবাদে ২ হাজার ৫৯৯টি ও মহাদানে ৪ হাজার ৪৯৮টিসহ মোট ৩৭,৫৯৭টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতি জনকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শওকত জামিল বলেন, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ৩৭ হাজার ৫৯৭ গরিব মানুষের মধ্যে ৩৭৫ টন চাল বিতরণ করা হবে। তাই সরিষাবাড়ী উপজেলাবাসী সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে চাল বিতরণে স্থানীয় সাংসদ আবদুর রশীদ, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন পাঠান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. হারুন অর রশিদ, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান ও  সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিসুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। 

(লেখক: সাংবাদিক ও ডিরেক্টর- বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাব, ঢাকা এবং সাবেক শিক্ষক ও এনজিও কর্মকর্তা)