ঢাকা, সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ময়মনসিংহ রোডে ১ যুগের ও বেশী সময় ধরে ইজ্জতপুর রেল স্টেশনটি বন্ধ

মহিউদ্দিন আহমেদ শ্রীপুর (গাজীপুর )প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই ২০২৩ ০৩:০৮:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রাচীনতম রেলওয়ে স্টেশন ইজ্জতপুর। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশনটি জনবল সংকটে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ বন্ধ থাকায় এটি এখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।


১ যুগেরও বেশী সময় ধরে  ইজ্জতপুর রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।  অরক্ষিত হয়ে পড়েছে রেলস্টেশনের পয়েন্টস ও স্টেশন–সংলগ্ন লেভেল ক্রসিং গেটগুলো।



এতে রেলযাত্রী ও সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত ঝুঁকি বেড়েই চলছে। স্টেশন বন্ধ হওয়ায় ওই এলাকার ট্রেনযাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দীর্ঘ এক যুগ বেশী সময় ধরে। স্টেশনটি বন্ধ থাকায় অযত্নে ও অবহেলায় স্থাপনাগুলি ভেঙে পড়তে শুরু করেছে।


বর্তমানে মাদকসেবিদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে ঘরগুলো। দীর্ঘদিন স্টেশনটি বন্ধ থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চুরি হচ্ছে রেলওয়ে মূল্যবান সম্পদ। এক সময় ৩/৪টি লোকাল ট্রেন যাত্রা বিরতি করত এ স্টেশনে। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে কোন ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করছে না।


জনবল সংকটে দীর্ঘদিন স্টেশনটি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। বন্ধ স্টেশন চালুর দাবিতে কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক বার মানববন্ধনসহ লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয়রা। স্টেশনটি চালু হলে কম সময় ও অল্প খরচে জেলা শহর এবং রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত আরো সহজ হতো এলাকাবাসীর। দ্রুত সমস্যা দূর করে পুনরায় স্টেশনটি চালুর কথা জানিয়ে ছিলেন গাজীপুর-৩ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসনে সবুজ, কিন্তু এখনো স্টেশনটির চালু করার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।

স্টেশনটি চালু হলে আশপাশের ২৫-৩০টি গ্রামের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করবেন। একই সাথে চরম ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে ওই এলাকার ৩০টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। গাজীপুরের প্রাচীনতম ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশন ফের চালুর দাবিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রেলপথ অবরোধ করে একাধিকবার মানববন্ধন করেছেন।

১৯৬৫ সাল তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আমলে এ স্টেশন চালু হয়। সে সময় এই এলাকায় চলাচলের অন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না পায়ে হেটে রাজধানী ও জেলার সাথে যোগাযোগ করতে হতো। ট্রেনই ছিল একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। বর্তমানেও জেলা শহর অথবা রাজধানীর সাথে যোগাযোগ করতে হলে কোনো জায়গায় ৫ কিলোমিটার কোনো জায়গায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা অটোরিকশা অথবা পায়ে হেঁটে বাসের রাস্তায় যেতে হয়।

গত ১৫ বছর আগে এ স্টেশনে ৩ টি লোকাল ট্রেন যাত্রা বিরতি করতো। বর্তমানে এ স্টেশনে কোনো ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করেনা। প্রায় ১ যুগের বেশী সময় ধরে ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ থাকায় এটি এখন অচল হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী রেলমন্ত্রী ও উন্নয়নের রুপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্টেশনটি মেরামত করে দ্রুত চালুর দাবি জানান। স্টেশনটি চালু থাকলে কম সময়ে জেলা শহর এবং রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সহজে অল্প খরচে রেলের মাধ্যমে যাতায়াত করা যায়, এই এলাকার ব্যবসায়ীদের মাল আনা নেওয়ার একমাত্র রাস্তা ছিল রেলপথ। কিন্তু বাসের মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় তাতে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়।

দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়দেবপুর স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ হানিফ মিয়া জানান, ‘ইজ্জতপুর স্টেশনটি দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রয়েছে আমি অবগত আছি এ ব্যাপারে সঠিক কোন তথ্য আমি দিতে পারতেছি না বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারব ,কিন্তু আমি  যতটুকু জানি জনবল সংকটে রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ আছে। সরকার জনবল নিয়োগ দেয়া শুরু করেছে। 

এলাকাবাসী সমস্যার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য এরই মাঝে স্টেশনটি চালু করাতে রেল মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি আশা করছেন জনবল নিয়োগ করে ও অন্যান্য সমস্যা সমাধান করে অচিরেই আবারো চালু করা হবে এই স্টেশনটি।