ঢাকা, সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকারিভাবে ধান সংগ্রহে ঘুষ-বাণিজ্য

শৌখিন মিয়া, রৌমারী ও চর রাজিবপুর : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৩ জুলাই ২০২৩ ০৯:০৭:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়
 
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কৃষকের কাছ থেকে সরকারিভাবে ধান কিনতে ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে।
 
খাদ্যগুদাম অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ২৫৭ জন কৃষকের কাছ থেকে ৭৭১ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখন পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করা হয়েছে ৬০৯ টন। তবে একজন কৃষক (৭৫ মণ) তিন টন করে ধান বিক্রি করতে পারবেন। ধান সংগ্রহ শুরু হয় চলতি বছরের ৭ মে। শেষ হবে ৩১ আগস্ট।
 
কার্ডধারী ভুক্তভোগী কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা খাদ্যগুদামে টনপ্রতি ধান বিক্রি করতে একজন কৃষককে ২ হাজার ১০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এ ছাড়া মণপ্রতি অতিরিক্ত হিসেবে দুই কেজি করে ধানের দাম ৬০ টাকা দিতে হয় গুদাম কর্মকর্তা শহিদুল্লাহকে। এতে সরকারি গুদামে তিন টন ধান বিক্রি করতে কৃষকের বেরিয়ে যাচ্ছে ১১ হাজার টাকা। এ ছাড়া গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর যোগসাজশে গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান কিনছেন তিনি। যাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতে পারছেন, শুধু তাদেরই ধান কিনছেন ওই কর্মকর্তা।
 
কৃষকরা আরও অভিযোগ করেন, প্রান্তিক কৃষকরা নমুনা নিয়ে খাদ্যগুদামে আর্দ্রতা পরীক্ষা করাতে গেলে ‘ধানের মান ভালো নয়’, এমন অজুহাতে তাদের ধান ফিরিয়ে দেয়া হয়। অথচ সেই ধানই কৃষকের কাছ থেকে কিনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তা গুদামে সরবরাহ করছে স্থানীয় একটি চক্র। গুদামে কৃষকের ধান সংগ্রহের মান যাচাইয়ের নামে করা হয় টালবাহানা ও হয়রানি।
 
লটারিতে নাম ওঠা কার্ডধারী কৃষক ও জাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, এক মাস ঘুরেও তিন টন ধান গুদামে বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
 
নিজের নামের তিন টন ধান খাদ্যগুদামে বিক্রি করেন কার্ডধারী কৃষক শফিউর রহমান। তিনি বলেন, এজন্য তাকে টনপ্রতি ২ হাজার ১০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে গুদাম কর্মকর্তাকে। ‘বস্তা খালি নেই’, ‘গুদামে জায়গা নেই’ এসব বলে বিভিন্ন টালবাহনা ও হয়রানি করেন ওই কর্মকর্তা।
 
অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় রৌমারী উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়।’ কৃষকের সঙ্গে টালবাহনা ও হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুদামে জায়গা খালি নেই। এ কারণে কৃষকের ধান নেয়া যাচ্ছে না।’
 
রৌমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আলাউদ্দিন বসুনিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’