ঢাকা, শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বগুড়া অংশের কাজ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে

সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বৃহৎ কর্মযজ্ঞ সাসেক-২ পাল্টে দিচ্ছে উত্তরের দৃশ্যপট

বগুড়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

উত্তরাঞ্চলে উন্নয়নের বৃহৎ কর্মযজ্ঞ সাউথ এশিয়া সাবরিজওনাল ইকোনমিক কো অপারেশন প্রকল্প (সাসেক-২) পাল্টে দিচ্ছে উত্তরের দৃশপট। অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে আনছে এক অভুতপূর্ব পরিবর্তন। সাসেকের মাধ্যমে উন্নয়নের ছোঁয়া এখন পুরো উত্তরজুড়ে। চলতি বছরেরর মধ্যেই সাসেকের বগুড়া অংশের কাজ শেষ হচ্ছে। অপর দিকে আসন্ন ঈদ উল ফিতর কেন্দ্রিক ঈদযাত্রায় মহাসড়কে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাসেক সংশ্লিস্টরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ঈদযাত্রাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের বগুড়া সিরাজগঞ্জ ও রংপুর অংশে মোট ৭ টি ওভারপ ও আন্ডার পাস। খুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বগুড়া অংশে এই প্রকল্পের কাজ ৮২ শতাংশ শেষ হয়েছে আর পুরো প্রকল্পের মোট ৭৩ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে সাসেক-২ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

মহসড়কের উন্নয়ন ও আঞ্চলিক ও আর্ন্তজাতিক সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে সাসেক-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০১৯ সালে। এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ণ মোড় পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়কসহ অবকাঠামো নির্মাণে এই মেগা প্রকল্পের তৃতীয় ধাপ শুরু হবে সাসেক-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে। তৃতীয় ধাপে সাসেক প্রকল্পটি আর্ন্তজাতিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে। সাসেক-৩ প্রকল্প যাবে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত। এর আরেকটি প্রকল্প শেষ হবে বুড়িমারি পর্যন্ত। সাসেক-২ পরবর্তী দু’টি প্রকল্প দুটি স্থলবন্দরে সংযুক্ত হবে। সাসেক প্রকল্পটি শেষ হলে এই যোগাযোগ নেটওয়ার্কটি আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলে আমূল পরিবর্তন বয়ে আনবে। ইতোমধ্যে সাসেক ২ প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের এই পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সুত্র জানায়, সাসেক-২ প্রকল্পে প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা।  ভুমি অধিগ্রহনসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সংশোধনের পর এর প্রাক্কলন ব্যয় দাড়িয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। সাসেক সুত্র জানায়, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও এলেঙ্গায় অবকাঠামো(ফ্লাই ওভার) নির্মাণে এখনো জায়গা বুঝে না পওয়ায়  এক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা সৃস্টি হয়েছে। তবে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে। প্রকল্প উপ পরিচালক জয় প্রকাশ চৌধুরী জানান, মোট ১১ প্যাকেজের এই প্রকল্পের বগুড়া অংশের কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। আর সাসেক-২ এর পুরো প্রকল্প সম্পন্ন হবে আগামী বছরের ডিসেম্বরে। বগুড়া অংশে ৩টি প্যাকেজের আওতায় রয়েছে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ১৪ টি ওভার পাস নির্মাণ। তিনি জানান ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বগুড়া অংশে তিনমাথা ওভারপাস, ফুলতলা ও বি ব্লক আন্ডার পাস খুলে দেয়া হয়েছে। এগুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করেছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জের মুলিবাড়ি, পাঁচিলা এবং রংপুরের মীর্জাপুরে আরো ৪টি আন্ডারপাস একই উদ্দেশ্যে খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বগুড়ার বনানী ও মাটিডালি এলাকায় রাস্তা প্রশস্ত করে দেয়া হয়েছে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রায় স্বস্থি আনতে। সাসেক-২ প্রকল্পে দ্রুত গতির ৪ লেন ছাড়াও মন্থরগতির যানবাহনের জন্য রয়েছে আরো ২টি লেন। প্রকল্পের সামান্য কিছু অংশ বাদে পুরো প্রকল্প ৬ লেনে হচ্ছে। তবে সাসেক প্রকল্প ঘিরে গোটা উত্তরে পরিবর্তনের সুর। কারণ এটি শুধু একটি যোগাযোগ নেটওয়ার্ক নয়  অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরোকটি সোপান। আর্ন্তজাতিক সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক। এটির বানিজ্যিক গুরুত্ব রয়েছে অনেক বেশি। এটি শেষ হলে সংযুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বানিজ্যিক লেনদেনও বাড়বে। এই উন্নয়ন সাসেক প্রকল্পের মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে। অপর দিকে সাসেক সংশ্লিস্ট সুত্র জানিয়েছে বগুড়ার শেরপুর ও বনানীসহ আরো কিছু স্থানে পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে প্রয়োজন নীরিখে ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।