বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (২ দশমিক ৭ ফারেনহাইট) রাখার লক্ষ্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, স্থল এবং সাগরে কয়েক মাসে রেকর্ড ভাঙা গরম সত্ত্বেও পৃথিবীবাসী তার লক্ষ্য নির্ধারণে চরম ব্যর্থ হয়েছে।
ইইউ-অর্থায়িত কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সি৩এস) বলছে, গত কয়েকদিন গড় বৈশ্বিক ভূপৃষ্ঠের বায়ুর তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ১ দশমিক ৫ সেন্টিগ্রেডের বেশি ছিল।
এ ঘটনাকে ভীষণ উদ্বেগজনক বলছেন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সারাহ পারকিন্স-কির্কপ্যাট্রিক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সময় শেষ হয়ে গেছে। কারণ পরিবর্তনের জন্য অনেক সময় লাগে।’
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) মতে, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ভয়াবহ হারে বেড়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে বরফ গলা, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং আবহাওয়া উষ্ণ হয়েছে।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে তাপমাত্রা জুনের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। চরম তাপপ্রবাহ আঘাত করেছে যুক্তরাষ্ট্রেও। উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ চলতি মাসে তাপমাত্রা গড় থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এতে অঞ্চলে দেখা দিয়েছে দাবানল। আর এর ধোঁয়া কানাডা এবং ইউএস ইস্ট কোস্টকে বিপজ্জনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অঞ্চলে কার্বন নিঃসরণ রেকর্ড ১৬০ মিলিয়ন মেট্রিক টন ছাড়িয়েছে।
জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারত। তীব্র গরমে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। স্পেন, ইরান এবং ভিয়েতনামে প্রচণ্ড তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সামনের বছরগুলোয় এমন তাপমাত্রা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে উঠতে পারে।
প্রধানত শিল্পোন্নত দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে তেল-গ্যাস-কয়লা পোড়ানোর ফলে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকারক কার্বন পরিবেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হচ্ছে।