ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। লাইনচ্যুত ও বিধ্বস্ত হওয়া বগির মধ্য থেকে এখনও ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ জনে। আহত হয়েছেন ৯ শতাধিক।
কর্মকর্তারা শনিবার বলেছেন, ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনা। খবর এএফপির
রাতে হাওড়া এবং শালিমার স্টেশনে ভিড় করেছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের উদ্বিগ্ন স্বজনরা। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লাখ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার।
শনিবার ভোর হওয়ার সাথে সাথে উদ্ধারকর্মীরা ভয়াবহ দুর্ঘটনার পুরো চিত্র দেখতে সক্ষম হন। ওড়িশা ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারঙ্গি বলেছেন যে, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮ জনে।
তিনি বলেন, উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। অনেকে গুরুতর আহত।
ভারতে রেল দুর্ঘটনার জন্য অপরিচিত নয় এবং বেশ কয়েকটি বিপর্যয় দেখেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিল ১৯৮১ সালে, যখন বিহারে একটি সেতু পার হওয়ার সময় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং নদীতে পড়ে যায়। এতে ৮০০ থেকে ১০০০ লোক মারা যায়।
তবে শুক্রবারের দুর্ঘটনাটি ১৯৯০ এর দশকের পর সবচেয়ে খারাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
ওড়িশা রাজ্যের মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা নিশ্চিত করেছেন যে রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) দূরত্বে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পরে প্রায় ৮৫০ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার এখন (যাত্রীদের) উদ্ধার করা এবং আহতদের স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করা।
ভারতীয় রেলওয়ের নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ শর্মা বলেছেন যে, দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত।
এরই মধ্যে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় উচ্চ মাত্রার তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়া ওড়িশায় এক দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটিতে বাংলাদেশি যাত্রী থাকতে পারে। চিকিৎসার জন্য অনেক বাংলাদেশি এই ট্রেনে কলকাতা থেকে চেন্নাই যাতায়াত করেন। দুর্ঘটনায় কোনো বাংলাদেশি থাকলে তাদের তথ্য জানতে হটলাইন (+৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩ হোয়াটসঅ্যাপ) নম্বর দিয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
শুক্রবার রাতে উপ-হাইকমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই হটলাইনের কথা জানিয়েছে।