অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পর মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে বিপর্যয় ঘোষণা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। রোববার আঘাত হানা ওই ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ছয়জনের প্রাণহানির পর বিপর্যয় ঘোষণা করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান দ্বীপের কাছে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ চলতি শতকের অন্যতম শক্তিশালী ছিল। বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে রোববার এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি এই ঘূর্ণিঝড়ের।
রাখাইনের নিম্নাঞ্চলে ভারী বর্ষণ, তীব্র বাতাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানী সিত্তেতে এই ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে বলেছেন, শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে মোখা। ঘণ্টায় ২৯০ কিলোমিটারের বেশি বেগে আঘাত হানা এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছপালা উপড়ে পড়েছে। রাখাইনের যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রাখাইনে বাস্ত্যুচুত রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আশ্রয় শিবিরও মোখার আঘাতে ধ্বংস হয়েছে। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশে বছরের পর ধরে জাতিগত সংঘাত চলে আসছে।
রোববার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের কাইউকপিউ শহর অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় মোখা। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক কার্যালয় বলেছে, চলমান খারাপ আবহাওয়া এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে এখনও দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে পুরোপুরি মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি।
‘তবে প্রাথমিক পর্যালোচনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়, বিশেষ করে বাস্ত্যুচুত লোকজনের মাঝে মানবিক সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
এখন পর্যন্ত সিত্তেতে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে নিহতদের মধ্যে ১৪ বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
রাখাইনের বিভিন্ন এলাকার ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাড়িঘরের ছাদ উড়ে গেছে, টেলিকম টাওয়ার ও বিলবোর্ড ভেঙে পড়ছে।