বাংলাদেশের ক্রিকেটার নাসির হোসেনকে ক্রিকেট সম্পর্কিত সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি।
আরব আমিরাতের টি-টেন লিগে খেলতে গিয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছিলেন তিনি। আগেই নাসিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এবার আইসিসি অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ঘোষণা করা হলো। আইসিসির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এ তথ্য।
নাসিরের বিপক্ষে অ্যান্টি করাপশন বিধিতে মোট তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত। নাসির নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন, তিনি সেই তিনটি অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যে কারণে ২ বছর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি থেকে ৬ মাস বাদ দেয়া হয়েছে।
অর্থ্যাৎ, মোট দেড় বছর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করতে হবে নাসিরকে এবং এই শাস্তিকে মেনে নেয়ার কারণে ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল নিষেধাজ্ঞা থেকে তার মুক্তি মিলবে বলেও জানানো হয় আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে নাসিরসহ মোট আট ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) পক্ষ থেকে দুর্নীতির অভিযোগ গঠন করে আইসিসি। যদিও আজ শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে শুধু নাসিরের বিরুদ্ধেই।
যে তিনটি অভিযোগ আনা নাসিরের বিরুদ্ধে, সেগুলো হলো- ২.৪.৩ ধারা লঙ্ঘণ। নাসির ৭৫০ ইউএস ডলারের উপহারের রসিদ নিয়োগকৃত দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। মূলত, ৭৫০ ডলার মূল্যের আইফোন-১২ উপহার পেয়েছিলেন তিনি জুয়াড়িদের পক্ষ থেকে।
২.৪.৪ ধারা অনুযায়ী, দুর্নীতির প্রস্তাব বা আমন্ত্রণের বিস্তারিত তথ্য দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নাসির।
২.৪.৬ ধারাও ভেঙেছেন তিনি। তাতে বলা আছে, সম্ভাব্য দুর্নীতির তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে কোনো ধরনের গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়াই সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানানো বা ব্যর্থ হয়েছিলেন নাসির।
আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ট্রাইবুন্যালের শুনানিতে নাসির হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সব স্বীকার করে নেন। যে কারণে, বাড়তি শুনানির প্রয়োজন হয়নি এবং ট্র্যাইব্যুনালের বিচারক তার বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেন ৬ মাসের শাস্তি মওকুফ সহ।
২০২১ সালে পুনে ডেভিলসের হয়ে আরব আমিরাতের টি-টেন লিগে খেলেছিলেন নাসির। দলকে সেবার নেতৃত্বও দেন তিনি। ৬ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ২৭ রান, নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।
নাসির ছাড়াও গত সেপ্টেম্বরে আনা আইসিসির অভিযোগে নাম এসেছিলো কৃষাণ কুমার চৌধুরী, পরাগ সাংভি, আজহার জাইদি, রিজওয়ান জাভেদ, সালিয়া সামান, সানি ধিলন ও শাদাব আহমেদের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে নাসিরই শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়।
এছাড়া এই ৮ জনের মধ্যে কৃষাণ ও পরাগ দলের যৌথ মালিক, আজহার ব্যাটিং কোচ, রিজওয়ান ও সালিয়া খেলোয়াড়। শাদাব ম্যানেজার। তাদের মধ্যে নাসির ও শাদাব ছাড়া বাকিদের অন্তর্বর্তীকালীন বহিষ্কার করা হয়েছিলো। নাসিরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান ছিল এবং অবশেষে এসে রায় প্রদান করা হলো।
বাংলাদেশের হয়ে ১৯টি টেস্ট, ৬৫টি ওয়ানডে ও ৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলা নাসির সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। সর্বশেষ গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ইউএস মাস্টার্স টি-টেন লিগে খেলেছেন নাসির। যেটি টি-টেন গ্লোবাল লিগেরই অংশ।