ঢাকা, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

নতুন মুখ: সিলেট-৬ আসনে এমরান আহমদ

এমএ রহিম, সিলেট: | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৪৮:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আরো এক বছর তিন মাস। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আগামীতে কোন্ দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোন্ এলাকায় কে এমপি নির্বাচিত হলে জনস্বার্থ প্রধান্য পাবে তা নিয়েও কম আলোচনা হচ্ছে না। এই আলোচনায় উঠে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা। স্থান পেয়েছে নতুন নেতৃত্বের নাম।

সিলেট অঞ্চলও ওই আলোচনা থেকে পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়েই বের হয়ে আসছে জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা নিয়ে সিলেট-৬ আসন গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে আসছে।

স্থানীয়রা আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনে জনবান্ধব প্রার্থী কামনা করছেন। এই আলোচনায় স্থান পেয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। স্থানীয় বিএনপির নেতা কর্মীরা বলছেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ একজন কর্মী বান্ধব নেতা। জনস্বার্থকে গুরত্ব দেন আন্তরিকভাবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে সিলেট-৬ আসনে এমরান আহমদকে প্রার্থী কামনা করেছেন তারা।

দলীয় সূত্র জানায় উত্তাল রাজনীতির মধ্যে এমরান আহমদের ছাত্র রাজনীতিতে হাতে খরি। ১৯৮৪ সালে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। সেসময় এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক মাঠ ছিল উত্তাল। ওই উত্তাল মাঠের কর্মী হিসেবে এমরান আহমদ মিছিল মিটিংয়ে নিজকে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৮৭ সালে এমসি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহŸায়কের দায়িত্ব লাভ করেন এমরান আহমদ। ১৯৮৮ সালে জেলা ছাত্রদলের সদস্য হন। এমসি কলেজ ছাত্রদলের আহŸায়ক হন ১৯৮৯ সালে। একই সময়ে জেলা ছাত্রদলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মনোনীত হন।

দলীয় সূত্র জানায় এরশাদ আমলে কারাগারে ঠাঁই হয়েছিল এমরান আহমদের। এরশাদের পতনের পর ১৯৯৪ সালে জেলা ছাত্রদলের আহŸায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য হন তিনি। ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য করা হয় এমরান আহমদকে। ২০০১ সালে জেলা ছাত্রদলের আহŸায়ক করা হয় এডভোকেট এমরানকে। ২০০২ সালে সম্মেলনে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। একই সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন এমরান আহমদ। ২০১৪ সালে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়কের দায়িত্ব লাভ করেন তিনি। ২০১৬ সালে জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৯ সালে জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য করা হয় তাঁকে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। এর আগেই তিনি আইন পেশায় নিজকে সম্পৃক্ত করেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, এমরান আহমদ একজন মানবিক নেতাও। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো  তাঁর স্বভাবে রয়েছে। করোনা দুর্যোগের সময় সেই মানবিকতা প্রকাশ করেছেন তিনি। করোনাভাইরাসের ভয়কে তুচ্ছ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে গেছেন অসহায় ঘরবন্দি মানুষের পাশে। কর্মহীন পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন খাদ্য সহায়াতা, আর্থিক সহায়তা। স্বাস্থ্য বিধির কারণে একাই ছুটে যেতেন। অবিরাম ওই কার্যক্রম চালিয়েছিলেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, এ বছর সিলেটে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এই বন্যার সময় এমরান আহমদ অবিরাম ছুটে গেছেন অসহায় মানুষের পাশে। পানিবন্ধী মানুষকে উদ্ধারে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি দুর্গম এলাকায় ছুটে গেছেন। ক্ষুধার্থ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। অসহায় পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেছেন খাদ্য সহায়তা। পুরো বন্যার সময় বন্যাকবলিত প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ছুটে গেছেন তিনি।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান নির্যাতিত নেতাকর্মীর মধ্যে প্রিয় হয়ে উঠেছেন এমরান আহমদ। সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে কমপক্ষে ২০ টি মামলার আসামি এমরান। এসব মামলা মাথায় নিয়ে তিনি অবিরাম সহযোগিতা করে যাচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের। হামলা আর মামলায় জর্জিত কোনো নেতাকর্মী তাঁর কাছে গেলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। অনেক কর্মীর মামলা পরিচালনা করেন তিনি। নির্যাতিত অনেক কর্মীর খোঁজখবর নেন বাড়িতে গিয়ে। কর্মী বান্ধব এই নেতাকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন কর্মীরা। অনেকে বলেছেন, আগামীতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এমরান আহমদকে সিলেট-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী দেখতে চান।

দৈনিক বায়ান্ন থেকে যোগাযোগ করা হয় এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সাথে। আগামীতে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানতে চাওয়া হয়। তিনি জানালেন, নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিএনপি নির্বাচনে গেলে তিনি অবশ্যই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেলে অবশ্যই নির্বাচন করবেন।