ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পাকিস্তানে ওষুধের জন্য হাহাকার, অস্ত্রোপচার হচ্ছে না হাসপাতালে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশের সময় : রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১১:১৭:০০ অপরাহ্ন | আন্তর্জাতিক

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আর্থিক খাতগুলোতে অনিয়মের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। এ সংকটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশটির স্বাস্থ্য খাতে। বর্তমানে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধও পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।  

 

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে কমতে প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। যে কারণে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আনতে পারছেন না উৎপাদনকারীরা।

 

 

এর ফলে স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। আর ওষুধ সংকটের কারণে হাসপাতালের বিছানায় রোগীরা কাতরালেও অস্ত্রোপচার করছেন না চিকিৎসকরা।

 

পাক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বর্তমানে অপারেশন থিয়েটারে মাত্র দুই সপ্তাহের চেতনানাশক ওষুধ রয়েছে। হার্ট, ক্যানসার এবং কিডনির মতো স্পর্শকাতর রোগের অস্ত্রোপচারের জন্য যা অত্যাবশ্যকীয় একটি ওষুধ।

 

এছাড়া আশঙ্কা করা হচ্ছে, যারা হাসপাতালে চাকরি করেন তারা চাকরি হারাতে পারেন। যা সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি করবে।

 

ওষুধ উৎপাদনকারীরা এ সংকটের জন্য বর্তমান আর্থিক ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। তারা বলেছেন, কাঁচামাল আমদানি করার জন্য লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) ছাড়পত্র দিচ্ছে না বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

 

আরও পড়ুন>>>অর্থ সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানকে ৭০ কোটি ডলার সহায়তা দিল চীন

 

পাকিস্তানের ওষুধ শিল্প প্রায় পুরোটাই আমদানি নির্ভর। মোট ওষুধের ৯৫ ভাগ কাঁচামালই ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশগুলো থেকে আসে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল করাচি বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে।

 

দেশটির ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (পিএমএ) কয়েকদিন আগে এ সমস্যা সমাধানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই এটি থামাতে হবে।

 

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের খুচরা ওষুধ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওষুধের সংকট নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে সরকার। তারা জানিয়েছেন, বাজারে এখন খুব সাধারণ কিন্তু অতি জরুরি প্যানাডোল, ইনসুলিন, ব্রুফেন, ডিসপ্রিন, ক্যালপল, তাগরাল, নিমেসুলেদে, হেপামারজ, বুসকোপান এবং রিভোট্রিলের মতো ওষুধগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।

 

 

গত মাসে (জানুয়ারি) পাকিস্তান ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের (পিপিএমএ) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সাঈদ ফারুক বুখারি জানিয়েছিলেন, ওষুধ উৎপাদন প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছিলেন, যদি আগামী ৪-৫ সপ্তাহ কাঁচামাল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে তাহলে ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দেবে।