সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের আগামী ২ মের মধ্যে পোর্ট সুদানে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর ৩ বা ৪ মের মধ্যে বাংলাদেশিরা জেদ্দায় পৌঁছাবে বলেও প্রত্যাশা মন্ত্রণালয়ের।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এসব তথ্য জানিয়েছে।
মুখপাত্র জানান, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিগত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলমান। গত দুই সপ্তাহে এ সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেসামরিক লোকজন ছাড়াও জাতিসংঘ কর্মী, মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। ইতোমধ্যে সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুদান থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার।
সেহেলী সাবরীন জানান, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে এই দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে, কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে প্রথমে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান এবং পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে এ বাংলাদেশিদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সুদানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যেই খার্তুম এবং এর আশপাশের শহর থেকে বাংলাদেশিদেরকে খার্তুম থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোর্ট সুদানে পরিবহনের জন্য নয়টি বাসের ব্যবস্থা করেছেন। জেদ্দার বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল থেকে একটি টিম দূতাবাসকে সহায়তার জন্য আগামীকাল (রোববার) সুদান পৌঁছাবে।
মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশিদেরকে পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় পরিবহনের জন্য সৌদি সরকার বিনামূল্যে সৌদি নৌবাহিনীর জাহাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২ মের মধ্যে সকল বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদানে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনার জন্য বর্তমানে পোর্ট সুদানে অবস্থান করছেন। ৩ মে বা ৪ মের মধ্যে বাংলাদেশিরা জেদ্দা পৌঁছে যাবেন মর্মে আশ করা হচ্ছে।
সেহেলী সাবরীন বলেন, জেদ্দার দুটি বাংলাদেশ স্কুলে সুদান প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে প্রায় ১২ ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে প্রবাসীদের যেন শারীরিক কোনো সমস্যা না হয় এ বিষয়টি মাথায় রেখে পোর্ট সুদানেও বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সুদান প্রবাসীরা যেদিন জেদ্দা পৌঁছবেন সেদিন থেকেই বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশিদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।