আকস্মিক বন্যায় সোমালিয়ার মধ্যাঞ্চলে প্রায় ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সম্প্রতি দেশটির একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৌসুমী বৃষ্টি এবং ইথিওপিয়ার উচ্চভূমি থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যা সোমালিয়ার অসংখ্য ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদিপশু ভাসিয়ে নিয়েছে। বন্যার ফলে হিরান অঞ্চলের রাজধানী বেলেদোয়েইনের কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ও স্কুলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
নূর বলেন, “বৃষ্টি আসায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। লোকজন তাদের ফসল বোনা শুরু করেছিল।”
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, খরার সঙ্গে সহিংসতা আর ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বেড়ে যাওয়া খাবারের দাম কেবল গত বছরই সোমালিয়ার ৪৩ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
জাতিসংঘ মানবিক কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) হিসাব অনুযায়ী, এ বছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে একাধিক বন্যায় দেশটির ৪ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মারা গেছে ২২ জন।
কেবল বেলেদোয়েইনির বন্যাতেই দুই লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, জানিয়েছে সোমালিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
রবিবার দেওয়া এক প্রতিবেদনে ওসিএইচএ জানায়, “টানা ছয় মৌসুমে হওয়া কম বৃষ্টির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।”
বৃষ্টির ফলে পানির উৎসগুলো নতুন করে ভরে উঠবে পাশাপাশি গাছপালাও ফের গজানোর সুযোগ পাবে। তবে খরার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আরও অনেক বেশি বৃষ্টি লাগবে, প্রতিবেদনে বলেছে ওসিএইচএ।
খরা, বন্যা- একের পর এক এমন দুর্যোগে তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছেন বেলেদোয়েইনের বাসিন্দা হালিমা আব্দুল্লাহ।
“আমরা দূরের গ্রামে চলে যাবো। বেলেদোয়েইনেতে আর নয়,” বলেছেন দুই সন্তানের এই মা।
হালিমার মতো বিশ্বের প্রায় ২২ কোটি মানুষ জলবায়ুজনিত চাপে ২০৫০ সালের মধ্যে নিজের দেশের ভেতরেই অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হবেন বলে অনুমান বিশ্ব ব্যাংকের।
বিশ্বব্যাপী মানুষের বিপদ আরও তীব্র করা বিষয়গুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনও যে আছে তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা অনেকদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতিকর প্রভাব কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনে যাদের দায় সবচেয়ে কম তাদের ওপরও পড়ছে।